প্র : আবুল মনসুর আহমদ কতসালে জন্ম গ্রহণ করেন?
উ : ৩রা সেপ্টেম্বর, ১৯৯৮।
প্র : তিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উ : ধনিখোলা গ্রাম, ময়মনসিংহ।
প্র : তিনি মূলত কী ছিলেন?
উ : সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ।
প্র : তিনি কত সালে ‘ছোলতান’ ও ‘মোহাম্মদী’র সহকারী সম্পাদক হন?
উ : ১৯২৩।
প্র : কত সালে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির দৈনিক ‘ইত্তেহাদ’ পত্রিকার সম্পাদক হন?
উ : ১৯৪৬ সালে, ১৯৪৮ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।
প্র : তিনি কোন কোন আন্দোলনে সাথে যুক্ত ছিলেন?
উ : খেলাফত, অসহযোগ, স্বরাজ আন্দোলন।
প্র : তিনি আওয়ামী লীগের কী ছিলেন?
উ : প্রতিষ্ঠাতা নেতা (১৯৫৩-৫৮ সাল পর্যন্ত সহ-সভাপতি)
প্র : যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী কর্মসূচির কী দায়িত্ব পালন করেন?
উ : ২১ দফার অন্যতম প্রণেতা।
প্র : তিনি যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার কোন মন্ত্রী ছিলেন?
উ : স্বাস্থ্যমন্ত্রী (১৯৫৪)।
প্র : পাকিস্তানি সরকার বেতার-টিভিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধ করলে তার অবস্থান কী ছিল?
উ : তিনি এই সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থনদান করেন।
প্র : তিনি কোন কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?
উ : খেলাফত আন্দোলন থেকে দেশবন্ধুর স্বরাজ পার্টি, সেখান থেকে সুভাষ বসুর কংগ্রেস, সেখান থেকে ফজলুল হকের কৃষক-প্রজাপার্টি, সেখান থেকে মুসলিম লীগ, তারপর আওয়ামী লীগ। কিন্তু জীবনের শেষ দিকে ইসলামি গোঁড়া মতবাদী।
প্র : তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা কী?
উ : উপন্যাস: সত্যমিথ্যা (১৯৫৩), জীবনক্ষুধা (১৯৫৫), অবে হায়াত (১৯৬৮); গল্পগ্রন্থ: আয়না (১৯৩৫), ফুড কনফারেন্স (১৯৪৪), আসমানী পর্দা (১৯৬৪); রাজনীতিবিষয়ক গ্রন্থ: আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর (১৯৬৯), শেরে বাংলা থেকে বঙ্গবন্ধু (১৯৭২); স্মৃতিকথা: আত্মকথা (১৯৭৮); শিশুসাহিত্য: ছোটদের কসাসুল আম্বিয়া (১৯৪৯), গালিভরের সফরনামা (১৯৫৯)।
প্র : নজরুল ইসলাম আবুল মনসুর আহমদের কোন গ্রন্থের ভূমিকা লেখেন?
উ : আয়না।
প্র : ‘আবেহায়াত’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : আবুল মনসুর আহমদের ‘আবেহায়াত’ (১৯৬৮) উপন্যাসে গ্রামের পির পরিবারের সন্তান হামিদের ডাক্তার হিসেবে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ ও শহরে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে দেখা যায়। মুখে সে জনদরদি হলেও মনেপ্রাণে ধনলিপ্সু। বাইরে বিজ্ঞানমনস্ক মনে হলেও ভেতরে ভেতরে আধ্যাত্মিকতায় আস্থা স্থাপনকারী। বিবাহিত প্রাক্তন সহপাঠী রাজিয়াকে স্ত্রী হিসেবে লাভ করার জন্য হামিদ খান বিজ্ঞানের খোলস ছেড়ে যখন আধ্যাত্মিকতা নির্ভর হয় তখন তার প্রকৃত রূপ বোঝা যায়। সমাজে হামিদের মতো লোকের অভাব নেই।
প্র : ‘আয়না’ গল্পগ্রন্থের পরিচয় দাও।
উ : হাস্যরসাত্মক গল্পের সমাহারে আবুল মনসুর আহমদ রচিত গল্পগ্রন্থ ‘আয়না’ ১৯৩৫ সালে প্রকাশিত হয়েছে। হুযুর কেবরা, গো-দেওতা-কা দেশ, নায়েবে নবী, লীডরে কওম, মুজাহেদীন, বিদ্রোহী সংঘ, ধর্মরাজ্য-এই সাতটি গল্প রয়েছে বইটির মধ্যে। যার মধ্যে ‘বিদ্রোহী সংঘ’ ছাড়া বাকি সবগুলো গল্পেই ধর্মান্ধ ও ধর্মব্যবসায়ী কয়েকটি চরিত্রকে তীব্র ব্যঙ্গবাণে জর্জরিত করা হয়েছে। ‘বিদ্রোহী সংঘ’ গল্পে ঢাকার ‘মুসলিম সাহিত্য-সমাজ’ কে ব্যঙ্গ করে বলা হয়েছে যে, তারা আত্মিক স্বাধীনতা বা আনন্দের জন্য উচ্চকণ্ঠ, কিন্তু দেশের পরাধীনতা নিয়ে মৌনব্রত পালন করে। ‘আয়না’ গ্রন্থের মুখবন্ধ লিখেছেন কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি লিখেছেন: ‘যে-সমস্ত মানুষ হরেক রকমের মুখোশ পরে আমাদের সমাজে অবাধে বিচরণ করছে, আবুল মনসুরের আয়নার ভেতরে তাদের স্বরূপ-মূর্তি বন্য ভীষণতা নিয়ে ফুটে উঠেছে।’
প্র : বাংলা সাহিত্যে তিনি কোন ধারার সাহিত্য রচনা করেন?
উ : ব্যঙ্গধারার।
প্র : সাহিত্যে তিনি কী পুরস্কার লাভ করেন?
উ : ১৯৬০-এ ছোটগল্পে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ।
প্র : তাঁর মৃত্যু তারিখ কত?
উ : ১৮.৩.১৯৭৯; ঢাকা।