প্র : আল মাহমুদের জন্ম কবে ও কোথায়?
উ : ১৯৩৬ সালের ১১ই জুলাই; ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মৌড়াইল গ্রামে।
প্র : লেখক আল মাহমুদের প্রকৃতনাম কী?
উ : মির আব্দুল শুকুর আল মাহমুদ।
প্র : আল মাহমুদ বলতে কী?
উ : তিনি বাংলাদেশের অন্যতম কবি।
প্র : তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু?
উ : মাধ্যমিক পাস।
প্র : তাঁর প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ কোনটি?
উ : সোনালী কাবিন (১৯৭৩)।
প্র : তাঁর প্রধান গ্রন্থগুলো কী?
উ : কাব্যগ্রন্থ: লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৭৩), আদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না (১৯৮০), বখতিয়ারের ঘোড়া (১৯৮৪), দোয়েল ও দয়িতা (১৯৯৭), পাখির কাছে ফুলের কাছে, প্রেমের কবিতা, দ্বিতীয় ভাঙ্গন (২০০২); গল্পগ্রন্থ: পানকৌড়ির রক্ত (১৯৭৫), সৌরভের কাছে পরাজিত (১৯৮৩), গন্ধবণিক (১৯৮৬), ময়ূরীর মুখ (১৯৯৪); উপন্যাস: ডাহুকী (১৯৯২), উপমহাদেশ (১৯৯৩), আগুনের মেয়ে (১৯৯৫), চেহারার চতুরঙ্গ (২০০০), কাবিলের বোন (২০০১)।
প্র : ‘সোনালী কাবিন’ কাব্যগ্রন্থের পরিচয় দাও।
উ : আল মাহমুদের কবি-প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করেছিল ‘সোনালী কাবিন’ (১৯৭৩) কাব্যগ্রন্থ। এই গ্রন্থে বিভিন্ন শিরোনামের কবিতার সঙ্গে ‘সোনালী কাবিন’ নামে চৌদ্দটি সনেটের সমন্বয়ে একটি দীর্ঘ কবিতাও অন্তর্ভুক্ত। এটিকে একটি ক্ষুদ্র কাব্যগ্রন্থও বলা যেতে পারে। বলা যেতে পারে, বীজ কাব্যগ্রন্থ। অন্য কবিতাগুলো: জাতিস্মর, পালক ভাঙার প্রতিবাদে, ক্যামোফ্লাজ, শোণিতে সৌরভ, তোমার আড়ালে ইত্যাদি। পুরো কাব্যগ্রন্থটিতে বঞ্চিতের ক্ষোভ, শ্রমিকের ঘাম, কৃষকের পরিশ্রম গ্রামীণ আবহে উঠে এসেছে। অসাধারণ কাব্যভাষা, গীতল, অনুভবযোগ্য। যৌন-প্রসঙ্গও বাদ যায় নি, তবে তা করেছেন শ্রেণিচেতনার নিরিখে: ‘তারপর তুলতে চাও কামের প্রসঙ্গ যদি নারী/ ক্ষেতের আড়ালে এস নগ্ন করো যৌবন জরদ,/শস্যের সপক্ষে থেকে যতটুকু অনুরাগ পারি/তারো বেশী ঢেলে দেবো আন্তরিক রতির দরদ/সলাজ সাহস নিয়ে ধরে আছি পট্টময় শাড়ি/সুকণ্ঠি কবুল করো, এ অধমই তোমার মরদ।’ মার্কসবাদীরা অবশ্য শ্রেণিচেতনার নামে রতি শক্তির এ ধরনের প্রদর্শন প্রশ্রয় দেন না। যৌবনকালে মার্কসবাদের নামে আল মাহমুদ সে স্বাধীনতা নিয়েছেন। বৃদ্ধ বয়সে অবশ্য তিনি ‘ভালো’ হয়ে গেছেন। কারণ তিনি লিখেছেন: ‘আমার বুকের ভেতর ধর্মের কল বাতাসে নড়ে ওঠে।’ ‘সোনালী কাবিনে’র কবিতাগুলো রচিত হয় ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে।
প্র : আল মাহমুদ শেষ পর্যন্ত কোথায় চাকরিরত ছিলেন?
উ : আল মাহমুদ উচ্চ সার্টিফিকেটধারী নন। তাই বাংলা একাডেমীর প্রুফ রিডার, চট্টগ্রামে একটি পত্রিকার সাংবাদিক ও পরে ঢাকায় জাসদ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল) প্রতিষ্ঠিত দৈনিক ‘গণকণ্ঠ’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের সুপারিশে তিনি শিল্পকলা একাডেমীর অফিসার পদে বিশেষ বিবেচনায় চাকরি লাভ করেন। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
প্র : স্বাধীনতা-উত্তরকালে তিনি কোন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন?
উ : দৈনিক গণকণ্ঠ (অধুনালুপ্ত)।
প্র : তাঁর কবিতার বিশেষত্ব কী?
উ : তিনি কবিতায় বাংলাদেশের লোকজ ঐতিহ্য ও লোকশব্দ ব্যবহারে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।