চক্ষু চড়ক গাছ (বিস্ময়ে হতবুদ্ধি): চোখের সামনে এমন একটা ভৌতিক কান্ড দেখে আমার চক্ষু চড়ক গাছ হল।
চক্ষুঃশূল (অন্তর দিয়ে যাকে সহ্য করা যায় না) : পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে আমি তার চক্ষুঃশূল হয়ে উঠেছি।
চক্ষুদান করা (চুরি করা) : পকেটমার আমার পকেট থেকে একশত টাকা চক্ষুদান করেছে।
চক্ষুদান করা (চুরি): পকেটমার আমার কলমটা চক্ষুদান করে নিয়ে গেল।
চক্ষুলজ্জা (সংকোচ) : চক্ষু লজ্জা থাকলে নির্মল এমন অন্যায় কাজ করতে পারত না।
চক্ষুশূল (পীড়াদায়ক) : এমএ পাস করে চাকরি জোটাতে পারে না, তাই রহিম বাপ-মায়ের চক্ষুশূল।
চাচা আপন প্রাণ বাঁচা (আগে নিজের জীবন রক্ষা করা): বিগত স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মীয়-কুটুম ছেড়ে অনেক চাচা আপন প্রাণ বাঁচা বলে চলে যায়।
চাচা আপন প্রাণ বাঁচা (সর্বাগ্রে নিজেকে সামলানো) : আগে নিজে উদ্ধার পাই-তারপর তোমার বিষয় ভাবা যাবে, কথায় বলে চাচা আপন প্রাণ বাঁচা।
চাটিবাটি গুটান (বাস্তুত্যাগ করা): চাটিবাটি গুটিয়ে চলে যাচ্ছ যাও; বলে রাখলাম, সেখানে না খেয়ে মরতে হবে বাপু।
চাঁদের হাট (আত্মীয়সহ সুখের মিলন): ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনী নিয়ে প্রিন্সিপ্যাল সাহেবের সংসার চাঁদের হাট।
চাঁদের হাট (সুখের সংসার) : আরিফের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে চাঁদের হাট বসিয়েছে।
চামচিকের লাথি (নগণ্য ব্যক্তির কটূক্তি) : সভাপতির পদ ছেড়ে দেয়ায় শামীম সাহেবকে এখন চামচিকেও লাথি মেরে যাচ্ছে।
চাল নেই চুলো নেই (নিঃস্ব) : হামিমের চাল নেই চুলো নেই, অথচ বড়লোকের মেয়েকে বিয়ে করতে চায়।
চালমারা (মিথ্যা বাহাদুরি করা) : নিতাই যে চালমারে ওর সাথে কোন বিষয়ে পারা ভার।
চিচিং ফাঁক (স্বার্থ লাভের সহজ পথ) : আলি বাবার মতো চিচিং ফাঁক বললেই সংসারে সুখ-সমৃদ্ধি পাওয়া যায় না।
চিনির পুতুল (অল্প পরিশ্রমে ক্লান্ত) : ধনীর দুলালেরা চিনির পুতুলই হয়।
চিনির পুতুল (যে অল্প পরিশ্রমেই ভেঙে পড়ে): ভালভাবে পরিশ্রম কর। এইরূপ চিনির পুতুল হয়ে থাকলে শেষে মুশকিলে পড়তে হবে।
চিনির বলদ (যে খাটে অথচ ফল ভোগ করতে পারে না): খাহাঞ্চী সাহেব যে চিনির বলদ, হাজার হাজার টাকার হিসাব রাখেন, কিন্তু একটি পয়সাও নেওয়ার অধিকার নেই।
চিনির বলদ (পরিশ্রমের ফলভোগী নয়) : সংসারের বড়রা সবসময় চিনির বলদের মতোই খেটে যায়।
চিনে জোঁক (নাছোড়বান্দা) : বড় সাহেবের মন রক্ষার জন্য ফারহান চিনে জোঁকের মত লেগে রইল।
চোখ কানা বোঁজা (নির্বিকারভাবে সহ্য করা) : শিক্ষকের গালমন্দ ছাত্ররা চোখ কান বুঁজে সহ্য করে।
চোখ কপালে তোলা (বিস্মিত হওয়া) : ছোটদের বড় কথা শুনে চোখ কপালে উঠল।
চোখ টাটান (হিংসা করা): আমার ভাল দেখলেই তোমার চোখ টাটায় কেন?
চোখ টাটানো (ঈর্ষা করা) : পরের ভালো দেখে চোখ টাটানো ভালো নয়।
চোখ পাকান (ক্রোধ দেখানো): তোমার চোখ পাকান দেখে আমি ভয় করি, তা মনে করো না।
চোখ পাকানো (রাগ প্রকাশ) : শ্রেণি শিক্ষকের চোখ পাকানো দেখে সবাই ভয় পেয়েছিল।
চোখ বোজা (মারা যাওয়া) : দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর গফুরের নানা চোখ বুজল।
চোখ বুঝে থাকা (ইচ্ছা করে না দেখা) : তোমার সামনে এত বড় একটা ঘটনা ঘটল অথচ তুমি চোখ বুঝে থাকলে?
চোখ বুলানো (দেখা) : পরীক্ষার আগে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো একবার চোখ বুলানো উচিত।
চোখে অন্ধকার দেখা (নিরাশ হওয়া): ব্যাংক ফেল হওয়ায় রহমান চোখে অন্ধকার দেখতে লাগল।
চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো (বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ) : আহমদ স্যার ছাত্রদের ভুলগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন।
চোখে ধোঁয়া দেখা (হতভম্ব হওয়া): মামলা মকদ্দমায় হেরে তালুকদার সাহেব চোখে ধোঁয়া দেখতে লাগলেন।
চোখে ধূলি দেওয়া (প্রতারণা করা): আমার চোখে ধূলি দিতে চাও, এতখানি বুদ্ধি এখনও হয়নি।
চোখে সরষে ফুল দেখা (বিপদে হত বুদ্ধি হয়ে পড়া) : চারিদিক থেকে বিপদের খবর পেয়ে লোকটি চোখে সরষের ফুল দেখতে লাগলেন।
চোখে সরষে ফুল দেখা (হতবুদ্ধি): প্রশ্নপত্র কিছুই কমন আসেনি দেখে ছাত্রটি চোখে সরষে ফুল দেখছে।
চোখের নেশা (মোহ): কি চোখের নেশায় তাকে পেয়ে বসেছে।
চোখের নেশা (রূপের মোহ) : সুন্দরবনের নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখে আমার চোখে নেশা লেগেছে।
চোখের পর্দা (লজ্জা) : আমাদের চোখের পর্দা না থাকার কারণে দুর্নীতি বাড়ছে।
চোখের পর্দা বা চামড়া (লজ্জা): চোখের পর্দা থাকলে সে আমার সাথে প্রবঞ্চনা করত না।
চোখের বালি (অসহ্য) : আয় উপার্জন না থাকলে স্বামীও স্ত্রীর চোখের বালি হয়ে দাঁড়ায়।
চোখের বালি (চক্ষুশূল): সতীনের মেয়েটি নতুন বৌয়ের যেন চোখের বালি, একেবারে দেখতে পারে না ওকে।
চোখের মাথা খাওয়া (কানা বা অন্ধ): তুমি কি চোখের মাথা খেয়েছ যে, ভূগোল আনতে গিয়ে ইতিহাস এনেছ।
চোখের মণি (অত্যন্ত প্রিয় বস্তু): বিধবা মায়ের একমাত্র ছেলেটি তার চোখের মণি।
চোখের মণি (অত্যন্ত প্রিয়) : একমাত্র মেয়ে রিশা মা-বাবার চোখের মণি।
চোরাবালি (প্রচ্ছন্ন আকর্ষণ): প্রলোভনের চোরাবালিতে সে নষ্ট হল।
চোরাবালি (প্রচ্ছন্ন বিপদ) : ও-পথে যেও না, চোরাবালিতে পড়বে।
চোরের মায়ের কান্না (যে বেদনা কাউকে জানানো যায় না): ছেলেকে চিরদিন সদুপদেশ দাওনি, পরিণামে তোমাকে চোরের মায়ের কান্না কাঁদতেই হবে।
চুনকালি দেয়া (কলঙ্ক) : ভদ্র ও নম্র মেয়েটির নামে এভাবে চুনকালি দেয়া ঠিক হয়নি।
চম্পট দেয়া (পলায়ন) : সুযোগ বুঝে চোরটি চম্পট দিল।
চরিয়ে খাওয়া (অপরকে ইচ্ছামত চালিয়ে অর্থোপার্জন) : উকিলরা মানুষ চরিয়ে খায়।
চর্বিত চর্বন (পুনরাবৃত্তি) : হাফিজ স্যারের প্রতিদিন চর্বিত চর্বন আর ভালো লাগে না।
চুল পাকানো (অভিজ্ঞতা অর্জন): মাস্টারী করে চুল পাকালাম, তুমি এসেছ ভুল ধরতে।
চুল পাকানো (দীর্ঘ অভিজ্ঞতা) : ত্রিশ বছর ধরে চাকরি করতে করতে চুল পাকিয়ে ফেললাম।
চুলোয় যাওয়া (ধ্বংস) : বখাটে ছেলেদের সঙ্গে এভাবে ঘোরাফেরা করলে লেখাপড়া চুলোয় যাবে।
চশমখোর (চক্ষু লজ্জাহীন) : হাসানের মতো চশমখোর লোক আমি আর দেখিনি।
চশমখোর (চক্ষুলজ্জাহীন) : প্রকৃত বন্ধু বিপদের সময় চশমখোরের মতো পালিয়ে যায় না।
চশমখোর (লজ্জাহীন): তোমার মত চশমখোর লোক ভূ-ভারতে বিরল।
চষে বেড়ানো (বহুবার গমনাগমন) : সমস্ত শহর চষে বেড়িয়েও তোমার খোঁজ পেলাম না।
চূড়ার উপর ময়ূর পাখা (ভালোর উপর ভাল): করিম সাহেবের জামাতা যেমন রূপবান তেমনি বিদ্বান, যেন চূড়ার উপর ময়ূর পাখা।
তথ্যসূত্র: পুরাতন বইয়ের দোকান/লাইব্রেরি হতে বিভিন্ন লেখকের বাংলা ব্যাকরণ বই সংগ্রহ করে তা এখানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।