প্র : জহির রায়হানের জন্মসন কত?
উ : ২৯শে অগস্ট, ১৯৩৫।
প্র : তিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উ : মজুপুর গ্রাম, ফেনি, নোয়াখালি।
প্র : জহির রায়হানের প্রকৃত নাম কী?
উ : মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ।
প্র : শহীদুল্লা কায়সারের সঙ্গে জিহর রায়হানের সম্পর্ক কী?
উ : তাঁরা উভয়ে সহোদর (ভ্রাতা) ছিলেন।
প্র : জহির রায়হান মূলত কী?
উ : কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্র পরিচালক।
প্র : তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু?
উ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স সহ বি.এ পাস (১৯৫৮)
প্র : তিনি কোন আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন?
উ : ১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে।
প্র : তিনি কখন চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন?
উ : ১৯৫৬-এ শেষের দিকে।
প্র : তাঁর প্রথম পরিচালিত ছবি কোনটি?
উ : কখনো আসে নি (১৯৬১)।
প্র : তাঁর পরিচালিত অন্য ছবিগুলো কী?
উ : সোনার কাজল (১৯৬১), কাঁচের দেয়াল (১৯৬৩) , বাহানা (১৯৬৫), বেহুলা (১৯৬৬), আনোয়ারা (১৯৬৭), সঙ্গম (১৯৬৪), জীবন থেকে নেয়অ (১৯৭০) ইত্যাদি।
প্র : তিনি বাংলাদেশে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গণহত্যার যে প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেছেন তার নাম কী?
উ : Stop Genocide.
প্র : তিনি তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তানে প্রথম কোন রঙিন ছবি সৃষ্টি করেন?
উ : সঙ্গম (টেকনিকালার)।
প্র : তাঁর সৃষ্ট প্রথম সিনেমাস্কোপ ছবি কোনটি?
উ : বাহানা।
প্র : তাঁর কোন ছবিটি শ্রেষ্ঠ বাংলা ছবি হিসেবে নিগার পুরস্কার লাভ করে?
উ : কাঁচের দেয়াল।
প্র : তাঁর রচিত উপন্যাসগুলোর নাম কী?
উ : তৃষ্ণা (১৩৬২), শেষ বিকেলের মেয়ে (১৩৬৭), হাজার বছর ধরে (১৩৭১), আরেক ফাল্গুন (১৩৭৫), বরফ গলা নদী (১৩৭৬), আর কত দিন (১৩৭৭) ও কয়েকটি মৃত্যু (১৩৮২)।
প্র : ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : আবহমান বাংলার জীবন ও জনপদ ‘হাজার বছর ধরে” (১৯৬৪) উপন্যাসের মূলে। নদী তীরবর্তী প্রকৃতির কোলে উপন্যাসের পাত্র-পাত্রী বিকশিত। এর ভাষা কাব্যিক, গতিশীল ও সুখপাঠ্য। উপন্যাসে যে জীবন ও জনপদের বর্ণনা আছে তা বাংলাদেশের আবহমানকালের। এই উপন্যাসে লেখক নিস্তরঙ্গভাবে তা তুলে ধরেছেন। তবে উপন্যাসের নায়িকা টুনি একমাত্র জীবন্ত চরিত্র। আর সবই যেন মৃত ও বিবর্ণ।
প্র : ‘আর কতদিন’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : যুদ্ধকালনি বাস্তবতা, লাঞ্ছিত মানবতার আর্তি ও শান্তির স্বপক্ষে জোরালো আবেদন নিয়ে জহির রায়হানের ‘আর কত দিন’ উপন্যাসটি ১৯৭০ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটির কাহিনি সংঘটনের বিস্তারিত বর্ণনা, কাহিনি শুরুর কোনো স্থান কাল নির্দেশ না থাকলেও গ্রন্থটির প্রকাশকাল ও ঘটনা বিন্যাসের আলোকে বুঝতে পারা যায় যে মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব সময়ের অস্থির সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলনমুখর প্রেক্ষাপটে আøন যুদ্ধের একটি ভয়াবহ সম্ভাবনা লেখকের হৃদয়ে উদয় হয়েছিল। শান্তি ও ভালোবাসার জন্য মানুষের চিরন্তন অম্বেষা উপন্যাসটির মূল উপজীব্য। আর উপন্যাসটির চরিত্র ইভা ও তপু শাশ্বত শান্তি ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক হয়ে ওঠে।
প্র : ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : বাঙালি জাতীয়বাদী আন্দোলন ও ১৯৫৫ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারি পালনের অভিজ্ঞতায় জহির রায়হান ‘আরেক ফাল্গুন’ (১৯৬৮) উপন্যাস রচনা করেন। নায়ক মুনিম, আসাদ, রসুল, সালমা চরিত্রের মতো অন্যান্য চরিত্র ইতিহাস অনুমোদিত। ১৯৫৫ সালে বর্তমান শহিদ মিনারের স্থায়ী ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ হয়ে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত চলমান আন্দোলন, জনতার সম্মিলন, ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ, তাদের প্রেম-প্রণয় ইত্যাদি উপন্যাসটির মূলবিষয়। তাদের বিবশ্বাস, জনতার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ আগামী ফাল্গুনে আরও প্রবল হবে। তাই তাদের উচ্চারণ : আসছে ফাল্গুনে আমরা দ্বিগুণ হবো। এই উপন্যাসে বাঙালির জাতীয় ঐতিহাসিক ঘটনাকে রূপায়িত করা হয়েছে।
প্র : তাঁর রচিত উপন্যাসগুলোর ভাষা কিরূপ ?
উ : ভাষা ঋজু ও সাবলীল এবং কাব্যগুণমন্ডিত।
প্র : তাঁর রচিত সুপরিচিত গল্পগ্রন্থটির নাম কি?
উ : সূর্যগ্রহণ (১৩৬২)।
প্র : তিনি আদমজি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন কেন?
উ : হাজার বছর ধরে উপন্যাস রচনার জন্য (১৯৬৪)।
প্র : তিনি বাংলা একাডেমী থেকে কি পুরস্কার লঅভ করেন?
উ : উপন্যাসের জন্যে মরণোত্তর সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭২)।
প্র : তিনি ছাত্রজীবন কোন কোন পত্রিকার সম্পাদনা ও প্রকাশনার কাজে যুক্ত ছিলেন?
উ : সাহিত্য মাসিক প্রবাহ এবং ইংরেজি সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস পত্রিকা।
প্র : তিনি কত তারিখে মৃত্যুবরণ করেন?
উ : ১৯৭২-এর ৩০শে জানুয়ারি মিরপুরের নিখোঁজ হন। তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায় না।