Friday, October 4, 2024

ডিরোজিও, হেনরি

প্র : ডিরোজিওর সম্পূর্ণ নাম কী?
উ : হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও।
প্র : তিনি কে ছিরেন?
উ : একজন ইউরেশীয় তরুণ কবি, যুক্তিবাদী, চিন্তাবিদ ও শিক্ষক।
প্র : তাঁর জীবৎকাল কত?
উ : ১৮০৯ থেকে ১৮৩১ (ডিসেম্বর) অর্থাৎ ২২ বৎসর।
প্র : তাঁর কর্মকান্ড ব্যাখ্যা কর।
উ : তিনি মাত্র সতের বৎসর বয়সে হিন্দু কলেজের (বর্তমান নাম প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষক নিযুক্ত হন। পড়াতেন ইংরেজি সাহিত্য ও ইতিহাস। প্রচলিত সংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামিকে প্রশ্রয় না দেয়া ছিল তাঁর শিক্ষার মূলকথা। ছাত্রদের নিয়ে ক্লাসের বাইরেও মুক্ত আলোচনা করতেন। তরুণ শিক্ষক হওয়ায় ছাত্ররা তাঁর সঙ্গে খুব সহজেই মিশে যেতো। সংস্কারপন্থীদের অভিযোগ ও চাপের ফলে এই ছাত্রপ্রিয় তরুণ শিক্ষককে হিন্দু কলেজ থেকে ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে বরখাস্ত করা হয়।
প্র : ডিরোজিও একটি সংগঠন করেছিরেন তার নাম কী?
উ : ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্টিত সংগঠনটির নাম ‘অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন’।
প্র : ডিরোজিওর অনুসারী মুক্তচিন্তক গোষ্ঠীকে কী বলা হয়?
উ : ইয়ংবেঙ্গল।
প্র : ডিরোজিও-র সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উ : ‘ডিরোজিও, হেনরি লুই ভিভিয়ান’ (১৮০৯-১৯৩১) হিন্দু কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। পিতার নাম ফ্রান্সিস ও মাতার নাম সোফিয়া। হিন্দু কলেজের যুবকদের মধ্যে তাঁর প্রভাব ছিল অত্যন্ত গভীর। কালীপ্রসাদ ঘোষ, রামতনু লাহিড়ী, প্যারীচাঁদ মিত্র, হরচন্দ্র ঘোষ, মাধবচন্দ্র মল্লিক, দক্ষিণারঞ্জন মিত্র প্রভৃতি যুবক ছিরেন তাঁর শিষ্য। এই ছাদল ‘ইয়ংবেঙ্গল’ নামে পরিচিত ছিল। যুক্তি ও তর্কের দ্বারাসমাজ, ধর্ম, নীতি সমস্ত কিছুকে যাচাই কিরে দেখার এক নতুন প্রেরণা সঞ্চার করেছিলেন ডিরোজিও তিনি ইংরেজিতে কবিতা লিখতেন। তাঁর প্রধান গ্রন্থ The Fakeer of Jungkeera (১৯২৮)। হিন্দু কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর চিন্তাধারার প্রভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে তাঁকে কর্মচ্যুত করেন। বাংলা সাহিত্যের নতুন ভাবমন্ডল গঠনের ইতিহাসে তাঁর ছাত্রদের দান স্মরণীয়।
প্র : ‘ইয়ংবেঙ্গল’-এর পরিচয় দাও।
উ : ‘ইয়ংবেঙ্গল’ ডিরোজিও প্রভাবিত এক তরুণ ছাত্রগোষ্ঠী। এঁদের মধ্যে প্রধান কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধায়, রসিককৃষ্ণ মল্লিক, রামগোপাল ঘোষ, রামতনু লাহিড়ী, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, প্যারীচাঁদ মিত্র ও তারাচাঁদ চক্রবর্তী। ছাত্র হিসেবে সকলেই ছিরেন প্রতিভাবান, ইংরেজি শিক্ষার প্রতি প্রবল আগ্রহী। প্রথম জীবনে হিন্দুধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধাপরায়ণ ও ঐতিহ্য সম্পর্কে অত্যন্ত সমালোচনা মুখর। প্রচলিত হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ তাদের ঐক্যসূত্র। ঊনবিংশ শতাব্দীর সাহিত্য, ধর্ম, নীতি গঠনে তাঁদের বিশিষ্ট ভূমিকা ছিল।
প্র : হিন্দু কলেজের চাকুরিচ্যুতির পর তিনি যে পত্রিকার সম্পাদক হন তার নাম?
উ : ডেইলি দি ইস্ট ইন্ডিয়া।
প্র : বাংলা সাহিত্যে ডিরোজিও আলোচিত কেন?
উ : তাঁর ছাত্র ও অনুসারীবৃন্দ আধুনিক বাংলা সাহিত্যের সূচনাতে যুক্তিশীলতা ও মানসিকতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে সাহিত্য রচনা করেন।

Related Articles

Latest Articles