প্র : দীনেশচন্দ্র সেনের জন্ম তারিখ কত?
উ : ৩রা নভেম্বর, ১৮৬৬।
প্র : তিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উ : মাতুলালয়, বগজুড়ি গ্রামে, ঢাকা জেল্ া
প্র : তাঁর পৈতৃক নিবাস কোথায়?
উ : সুয়াপুর গ্রাম, ঢাকা।
প্র : তিনি পল্লীঅঞ্চলে ঘুরে ঘুরে কী সংগ্রহ করেন?
উ : প্রাচীন বাংলা পুঁথি ও লোককথা।
প্র : তিনি তাঁর সংগৃহীত পুঁথি থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে কী রচনা করেন?
উ : বঙ্গভাষা ও সাহিত্য (১৮৯৬)।
প্র : ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ মূলত কী?
উ : বাংলা সাহিত্যের সুশৃঙ্খল ও তথ্যসমৃদ্ধ ধারাবাহিক ইতিহাসমূলক গ্রন্থ।
প্র : কোনগ্রন্থ প্রকাশিত হলে পান্ডাত্যের বহু মনীষীর কাছে থেকে তিনি ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেন?
উ : ‘History of Bengali Language and literature’ (1911).
প্র : তাঁর রচিত আর একটি গবেষণামূরক গ্রন্থ কোনটি?
উ : বঙ্গসাহিত্য পরিচয় (১৯৪১)।
প্র : তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয হতে কী লাভ করেন?
উ : রামতনু লাহিড়ী রিসার্চ ফেলোশিপ (১৯১৩)।
প্র : তিনি কী সম্পাদনা করে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন?
উ : মৈমনসিংহ-গীতিকা (১৯২৩), পূর্ববঙ্গ গীতিকা (১৯২৬)।
প্র : কাকে নিয়োগ করে তিনি এই গীতিকাগুলো সংগ্রহ করেন?
উ : চন্দ্রকুমার দে।
প্র : এ ধরনের কাজে তিনি আর কাকে নিয়োগ করেছিরেন?
উ : কবি জসমি উদ্দীনকে।
প্র : ‘বৃহৎবঙ্গ’ গ্রন্থের পরিচয় দাও।
উ : ‘বৃহৎবঙ্গ’ (দুই খন্ডে প্রকাশিত ১৯৩৬) সুপ্রাচীনকাল হতে পলাশীর যুদ্দ পর্যন্ত সময়ের বাংলাদেশের ও পাশ্ববর্তী অঞ্চলের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস নিয়ে লিখিত গ্রন্থ। ‘বৃহৎবঙ্গ’ বহু তথ্য সম্বলিত এবং গভীর অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ রচনা। নিরপেক্ষভাবে তথ্য প্রদানের জন্য গ্রন্থটি সর্বমহলে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়।
প্র : ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ গ্রন্থের পরিচয় দাও।
উ : ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ (১৮৯৬) বাংলা সাহিত্যের প্রথম ইতিহাসগ্রন্থ। বঙ্গভাষা ও বঙ্গলিপির উৎপত্তি, সংস্কৃত-প্রাকৃত ও বাংলা রসম্পর্ক, প্রাচীন বাংলা সাহিত্য, মধ্যযুগের ধর্মগোষ্ঠী ও তাদের সঙ্গে সাহিত্যের যোগ ইত্যাদি বিষয়ের মনোজ্ঞ বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে এই গ্রন্থে। ইংরেজ-পূর্ব বাংলা সাহিত্যের এমন বিশারদ এবং অনুরাগপূর্ণ ইতিহাস ইতোপূর্বে রচিত হয় নি। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম ইতিহাসগ্রন্থ যেখানে সাহিত্য ও সমাজের গূঢ় সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়া হয়।
প্র : পূর্ববঙ্গ/মৈমনসিংহ-গীতিকার পরিচয় দাও।
উ : ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’ পূর্ববঙ্গের কোনো কোনো অঞ্চল, বিশেষত ময়মনসিংহ থেকে চন্দ্রকুমার দে সংগৃহীত। গীতিকাগুলি ১৯২৩ সালে ‘মৈমনসিংগ-গীতিকা’ নামে প্রকাশিত হয়। দীনেশচন্দ্র সেন ছিরেন এর সম্পাদক। আরও কয়েকটি খন্ড ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’ নামে প্রকাশিত হয়। ২য় খন্ড(১৯২৬), ৩য় খন্ড (১৯৩০), ৪র্থ খন্ড (১৯৩২)। এই সমগ্র গীতিকা সংকলনই ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’। এই গীতিকাগুলি Eastern Bengal Ballads নামে (১৯২৩-৩২) চারখন্ডে ইংরেজিতে অনূদিত হয়। কাহিনিগুলির প্রাচীনত্ব যেমনই হোক, সাহিত্যিক মূল্য যথেষ্ঠ। এই কাহিনিগুরির বৈচিত্র্য সারল্য এবং সৌন্দর্য সম্বন্দে সমালোচকেরা একমত। এখানে সম্পূর্ণভাবে মানুষের কথাই বলা হয়েছে। আধ্যাত্মিকতার স্পর্শ নেই। এমনকি এদের কাঠামোও মধ্যযুগের অন্যান্য কাব্য তেকে পৃথক।
প্র : তিনি কী কী ডিগ্রি, পদদক ও উপাধি লাভ করেন?
উ : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডি-লিট ডিগ্রি (১৯২১), জগত্তারিণী স্বর্ণপদক (১৯৩১) ও ভারত সরকার কর্তৃক রায় বাহাদুর (১৯২১) উপাধি।
প্র : তিনি কোনগ্রন্থ রচনা করে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনায় পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেন?
উ : ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’।
প্র : তিনি কত তারিখে মৃত্যুবরণ করেন?
উ : ২০শে নবেম্বর ১৯৩৯; বেহালার ‘রূপেশ্বর’ ভবনে।