সংযোজক অব্যয় লোপ পেয়ে পূর্বপদ ও পরপদের অর্থ প্রায় সম্পূর্ণ বজায় রেখে দ্বন্দ্ব সমাস গঠিত হয়। সমজাতীয় শব্দ বা বিপরীত জাতীয় শব্দ মিলে সমাস হয়। সাধারণত বিশেষ্য, বিশেষণ, ক্রিয়াপদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সমাস গঠিত হয়।
বিশেষ্য + বিশেষ্য পদ মিলে দ্বন্দ্ব: পিতা ও পুত্র- পিতাপুত্র; ছাত্র ও ছাত্রী- ছাত্রছাত্রী; সোনা ও রূপা- সোনারূপা; মা ও বাবা- মাবাবা; কালি ও কলম- কালিকলম; গাছ ও পাথর- গাছপাথর; আকাশ ও বাতাশ- আকাশ বাতাস; চন্দ্র ও সূর্য-চন্দ্রসূর্য।
বিশেষণ+বিশেষণ পদ মিলে দ্বন্দ্ব: আলো ও আঁধার- আলো আঁধার; লঘু ও গুরু- লঘুগুরু; ছোট ও বড় + ছোটবড়; আজ ও কাল- আজকাল; ভাল ও মন্দ- ভালমন্দ; ন্যায় ও অন্যায়- ন্যায়অন্যায়। সহজ ও সরল- সহজসরল।
ক্রিয়াপদ + ক্রিয়াপদ পদ মিলে দ্বন্দ্ব: মার ও ধর- মারধর; লেখা ও পড়া- লেখাপড়া; জানা ও শোনা- জানাশোনা; হেসে ও খেলে- হেসেখেলে।
সমজাতীয় বা সমার্থক শব্দ মিলে দ্বন্দ্ব: ধন ও মান- ধনমান; সাজ ও পোশাক- সাজপোশাক, খাতা ও কলম- খাতাকলম; হাট ও বাজার-হাটবাজার; টাকা ও পয়সা- টাকাপয়সা; আত্মীয় ও স্বজন- আত্মীয়স্বজন।
বিপরীত জাতীয় বা বিপরীত অর্থের শব্দ মিলে দ্বন্দ্ব: লেন ও দেন- লেনদেন; জন্ম ও মৃত্যু- জন্মমৃত্যু; যোগ ও বিয়োগ- যোগবিয়োগ; ছেলে ও মেয়ে- ছেলেমেয়ে; ভাল ও মন্দ- ভালমন্দ।
অলুক দ্বন্দ্ব: দ্বন্দ্ব সমাস গঠনে সমাসবদ্ধ পদের বিভক্তি লোপ না পেলে তাকে অলুক দ্বন্দ্ব সমাজ বলে।
মায়ে-ঝিয়ে- মায়েঝিয়ে; ঘরে ও বাইরে- ঘরেবাইরে; জলে ও ডাঙায়- জলেডাঙ্গায়; বুকে ও পিঠে- বুকেপিঠে; দুধে ও ভাতে- দুধেভাতে; হাটে ও বাটে- হাটেবাটে; ঠারে ও ঠোরে- ঠারেঠোরে; আগে ও পিছে- আগেপিছে।
বহুপদী দ্বন্দ্ব: দুই এর অধিক পদ সমাসবদ্ধ হয়ে সমাস গঠিত হলে তাকে বহুপদী দ্বন্দ্ব বলে। আকাশ, বাতাস ও পাতাল- আকাশ-বাতাশ-পাতাল। আম, জাম ও কাঁঠাল-আম-জাম-কাঁঠাল। এরূপ- হাত-পা-মুখ, টাকা-আনা-পাই, ঝাল-নুন-তেল, টক-ঝাল-মিষ্টি, হীরা-চুনি-পান্না।
একশেষ দ্বন্দ্ব: বাংলা ভাষায় কখনো কখনো পূর্বপদ ও পরপদ ছাড়াই সমাস গঠিত হয়, অর্থাৎ সঠিক ব্যাসবাক্য হয় না, এরকম সমাসকে একশেষ দ্বন্দ্ব বলে। যেমন- আমরা, এর ব্যাসবাক্য আমি, তুমি ও সে অথবা আমি ও তোমরা।
তথ্যসূত্র: পুরাতন বইয়ের দোকান/লাইব্রেরি হতে বিভিন্ন লেখকের বাংলা ব্যাকরণ বই সংগ্রহ করে তা এখানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।