প্র : প্রমথ চৌধুরীর জন্ম তারিখ কত?
উ : ৭ই আগস্ট, ১৮৬৮।
প্র : তিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উ : যশোর।
প্র : তিনি কোন সাহিত্যে সুপন্ডিত ছিলেন?
উ : ফরাসি ও ইংরেজি।
প্র : তিনি কী ছদ্মনাম ব্যবহার করে অনেক রচনা প্রকাশ করেন?
উ : বরিবল।
প্র : প্রমথ চৌধুরীকে কী বলা হয়?
উ : বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক।
প্র : চলিত রীতির তাঁর প্রথম গদ্যরচনা কোনটি?
উ : বীরবলের হালখাতা (ভারতী পত্রিকায় প্রকাশ : ১৯০২)।
প্র : তাঁর রচিত বীরবলের হালখাতা গদ্য রচনাটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উ : ভারতী।
প্র : তিনি কোন মাসিক পত্রিকাটি সম্পাদনা করে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন?
উ : সবুজপত্র (১৯১৪)।
প্র : ‘সবুজপত্র’ পত্রিকার পরিচয় দাও।
উ : ‘সবুজপত্র’ (১৯১৪) প্রথম চৌধুরী সম্পাদিত বিশিষ্ট সাহিত্য পত্রিকা। বৈশাখ ১৩২১ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত হয় এবং তের বছর চলে। মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়, পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় ও সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী সম্পাদনার কাজে সাহায্য করেন। এই পত্রিকাকে কেন্দ্র করে এক নূতন সাহিত্যগোষ্ঠী এবং সাহিত্যিক আদর্শ গড়ে ওঠে। এ পত্রিকাকে অবলম্বন করে চলিতরীতি বাংলাগদ্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। ‘সবুজপত্র’ রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও ভাষারীতির আধুনিকতার বিকাশে বিশেষ সহায়ক হয়েছিল। এরপর থেকে রবীন্দ্রনাথ চলিতরীতির গদ্য লেখায় অধিক উৎসাহী হন।
প্র : তিনি বাংলা সাহিত্যে কী হিসেবে স্মরণীয়?
উ : চলিত ভাষার প্রবর্তক ও বিদ্রুপাত্মক প্রাবন্ধিক হিসেবে।
প্র : প্রমথ চৌধুরী রচিত প্রবন্ধগ্রন্থগুলোর নাম কী?
উ : তেল নুন লকড়ি (১৯০৬), বীরবলের হালখাতা (১৯১৬), নানাকথা (১৯১৯), আমাদের শিক্ষা (১৯২০), রায়তের কথা (১৯২৬), নানাচর্চা (১৯৩২), প্রবন্ধ সংগ্রহ (১ম খন্ড-১৯৫২ ও ২য় খন্ড-১৯৫৩)।
প্র : তিনি আর কী রচয়িতা হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলেন?
উ : কবিতা ও ছোটগল্প।
প্র : তিনি বাংলা কাব্যসাহিত্যে কীসের প্রবর্তক হিসেবে বিশেষ স্থান লাভ করেন?
উ : ইটালীয় সনেটের।
প্র : ‘সুশিক্ষিত ব্যক্তি মাত্রই স্বশিক্ষিত’ উক্তিটি কার?
উ : প্রমথ চৌধুরীর।
প্র : তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলোর নাম কী?
উ : সনেট পঞ্চাশৎ (১৯১৩), পদচারণ (১৯১৯)।
প্র : তাঁর রচিত গল্পগ্রন্থগুলো নাম কী?
উ : চার ইয়ারী কথা (১৯১৬), আহুতি (১৯১৯), নীললোহিত ও গল্পসংগ্রহ (১৯৪১)।
প্র : ‘চার ইয়ারী কথা’র পরিচয় দাও।
উ : ‘চার ইয়ারী কথা’ (১৯১৬) প্রথম চৌধুরীর গল্পগ্রন্থ। চারবন্ধুর প্রেমের কাহিনি। প্রত্যেকটি প্রেমই অভিশপ্ত, নায়িকা চারজন ইউরোপীয়। প্রথম নায়িকা উন্মাদ, দ্বিতীয় চোর, তৃতীয় প্রতারক, চতুর্থ নায়িকা মৃত্যুর পর তার ভালোবাসা ব্যক্ত করেছে। ভাষার চাতুর্য, পরিহাসপ্রিয়তা এবং সূক্ষ্ম ব্যঙ্গ উদ্ভাসিত এই কাহিনি বাংলা ভাবালু প্রেমকাহিনির প্রতিবাদী।
প্র : তিনি আর কোন পত্রিকা সম্পাদনা করেন?
উ : বিশ্বভারতী পত্রিকা।
প্র : প্রমথ চৌধুরীর রচনায় ভাষাগত বিশেষত্ব কী- এক কথায় লিখুন।
উ : প্রমথ চৌধুরীর রচনার ভাষাগত বিশেষত্ব হলো, তীক্ষè মননশীলতা বাকচাতুর্যের চমৎকারিত্ব এবং বুদ্ধির অসিচালনা।
প্র : প্রমথ চৌধুরীর ভাষার সমালোচনা লেখ।
উ : প্রমথ চৌধুরীর রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্য শুধুমাত্র ক্রিয়াপদ ও সর্বনাম ছাড়া তিনি অন্য কোনো দিক থেকে মৌখিক ভাষার বিশেষ অনুকরণ করেন নি। ভাষার অনাবশ্যক মারপ্যাঁচ বাচনভঙ্গির অকারণ তির্যকতা ও অলংকারের চাকচিক্য তাঁর রচনায় কোথাও কোথাও চলিত ভাষাকে সাধুভাষার চেয়েও দুর্বোধ্য করে তুলেছে। সেজন্য প্রমথনাথ বিশী বলেছেন, ‘প্রথম চৌধুরীর রচনায় ব্যারিস্টারির প্যাঁচ আছে।’
প্র : রবীন্দ্র পরিবারের সঙ্গে প্রমথ চৌধুরীর সম্পর্ক কী?
উ : প্রমথ চৌধুরী রবীন্দ্রনাথের অগ্রজ বাংলার প্রথম সিভিলিয়ান সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা ইন্দিরা দেবীকে বিয়ে করেন।
প্র : তিনি কী পদক লাভ করেন?
উ : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক। উল্লেখ্য, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় নিজ মাতার নামে এ পদক প্রবর্তন করেন।
প্র : তিনি কত তারিখে মৃত্যুবরণ করেন?
উ : ২রা সেপ্টেম্বর, ১৯৪৬ (১৬ই ভাদ্র ১৩৫৩); শান্তিনিকেতন।