Friday, October 4, 2024

বাংলা বানানের নিয়মের তাৎপর্য কী?

যে কোন ভাষারই লিখিত রূপ ও মৌখিক রূপের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। মানুষ ভাষা যেভাবে ব্যবহার করে অর্থাৎ যেভাবে ধ্বনি উচ্চারণ করে তার সবটাই মুদ্রিত আকারে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। মানুষের ভয়, আতঙ্ক, শিহরণ, ক্ষোভ সম্বলিত শব্দ উচ্চারিত হয়, তবে মুদ্রিত অক্ষরে তা দেখে বোঝা সম্ভব নয়। অর্থাৎ লিখিত ভাষা ও মৌখিক ভাষা আলাদা। মৌখিক ভাষা শ্রুতিনির্ভর ও ধ্বনিনির্ভর। অক্ষরের ক্ষমতা এমন সীমিত যে, সব রকমের ধ্বনিকে সে মুদ্রিত আকার দিতে পারে না, এমনকি শব্দের উচ্চারণের উঠা-নামা, লয় তা কেবল মৌখিক ভাষায় অনুধাবন করা যায়। এক্ষেত্রে কান আমাদের সহায়ক। ঐতিহ্যগত দিক দিয়ে একটা জাতি নির্দিষ্ট শব্দের যে রকম উচ্চারণ করে, তার পরবর্তী প্রজন্ম সে রকম উচ্চারণ শিখে নেয়। এটা একটা পরম্পরা। যারা উচ্চারণ অনুযায়ী বানান লিখে সঠিক উচ্চারণ শেখাতে বা বোঝাতে চান, তারাও সঠিক পথে নেই। কারণ, ভাষার ঐতিহ্য দু’রকমের। উচ্চারণের সাথে আঞ্চলিকতা, পরিবেশ, বংশ জড়িত। আবার, জাতীয় পরিমণ্ডলে ঐক্য ধরে রাকতে মুদ্রিত রূপ অক্ষুণ্ন থাকে। কাজেই, সঠিক উচ্চারণ ব্যবহারিক জ্ঞানের দ্বারা রপ্ত করা ছাড়া উপায় নেই। আধুনিককালে সংগীত, আবৃত্তি, নাটক ইত্যাদি শিল্পে উচ্চারণের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ হচ্ছে। সঠিক উচ্চারণ নির্দিষ্ট ভাষাভাষীর পক্ষে সম্মানের বিষয়ও বটে।

Related Articles

Latest Articles