বংশের বাতি (একমাত্র উত্তরাধিকারী) : শাহেদ তার বংশের বাতি একমাত্র ছেলেটাকে হারালো।
বইয়ের পোকা (খুব পড়ুয়া) : খুশি বইয়ের পোকা না হলে ভালো রেজাল্ট করতে পারত না।
বউ কাঁটকী (বউকে যে জ্বালাতন করে): বউ কাঁটকী শাশুড়ীর কাছে মেয়ে কি সুখে থাকবে?
বুক দিয়ে পড়া (প্রাণপণে সহায়তা করা): পরের বিপদে এমনভাবে বুক দিয়ে পড়তে হাজী মুহম্মদ মুহসীনের মত কাউকে দেখিনি।
বুক দশ হাত হওয়া (আনন্দে ও উৎসাহে মন পূর্ণ হওয়া): বি.এ. পরীক্ষায় জজ সাহেবের ছেলে ফার্স্ট ক্লাস পাওয়ায় তাঁর বুক দশ হাত হল।
বুকের পাটা (সাহস) : নান্নুর বুকের পাটা আছে, তাইতো জনতার মোকাবিলা করতে পারল।
বকধার্মিক (ভ-) : আনিসের মতো বকধার্মিক লোকরা সমাজের শত্রু।
বকধার্মিক (ভন্ড ধার্মিক): এ জগতে বকধার্মিকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।
বগল বাজানো (আনন্দ প্রকাশ করা) : অন্যকে বিপদে পড়তে দেখে বগল বাজিওনা, নিজেই বিপদে পড়বে।
বাগে পাওয়া (কায়দায় পাওয়া): একবার বাগে পাইতো গায়ের ঝাল মেটাব।
বাঘের আড়ি (কঠিন শত্রুতা) : দুই বন্ধুর মধ্যে এখন বাঘের আড়ি চলছে।
বাঘের আড়ি (নাছোড়বান্দা, দুষমনি): সর্বস্ব খোয়ালে কি হবে, মল্লি ক সাহেব তার এককালের বন্ধুর বিরুদ্ধে বাঘের আড়ি পেতেছেন।
বাঘের দুধ (দুষ্প্রাপ্য বস্তু) : কথায় বলে, টাকা হলে বাঘের দুধও পাওয়া যায়।
বাঘের দুধ (দুষ্প্রাপ্য বস্তু): টাকায় কি না হয়, বাঘের দুধও টাকাতে লাভ করা যায়।
বাজখাঁই গলা (অত্যন্ত কর্কশ ও উচু গলা) : এমন বাজ খাঁই গলায় কাউকে ডাকা ঠিক নয়।
বাজিমাৎ (সফল) : বিশ^কাপ ফাইনালে ব্রাজিল বাজিমাৎ করে দিয়েছে।
বানরের গলায় মুক্তাহার (অপাত্রে উৎকৃষ্ট সামগ্রী দান): আয়শার মত ডানাকাটা পরীর নাকি বিয়ে হল ছাপোষা আবুলের সঙ্গে-এ যেন বানরের গলায় মুক্তাহার।
বাপের বেটা (পিতার উপযুক্ত পুত্র) : বাপের বেটা না হলে রুস্তম এমন কৃতিত্ব দেখাতে পারে?
বাম হাতের ব্যাপার (ঘুষ): বাঁম হাতের ব্যাপার করেই তিনি বাড়ি করেছেন।
বাম হাতের ব্যাপর (ঘুষ) : দেশের অফিস আদালতে আজ সর্বত্রই বাম হাতের ব্যাপার চলছে।
বারো ভূত (অনাত্মীয় লোকজন): আত্মীয়-স্বজন নেই খান বাহাদুরের, সম্পত্তি বারো ভূতে খাবে।
বালির বাঁধ (অল্পেই যা নষ্ট হয়): আমরা এতসব চেষ্টা করলাম, কিন্তু সবই যেন বালির বাঁধের ন্যায় নষ্ট হল।
বালির বাঁধ (ক্ষণস্থায়ী) : এ পৃথিবী বালির বাঁধ।
বাড়া ভাতে ছাই (সর্বনাশ) : কেবল শত্রু নয়, মিত্ররাও অনেক সময় মিত্রের বাড়া ভাতে ছাই দিতে কুন্ঠাবোধ করে না।
বিদ্যার জাহাজ (অতিশয় প-িত) : ঈশ^রচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন বিদ্যার জাহাজ।
বিদুরের খুদ (শ্রদ্ধায় সামান্য উপহার): গরীব প্রশাসকের বাড়িতে এসেছেন, এখন আশা করি এ বিদুরের খুদে আনন্দিত হবেন।
বিনা মেঘে পানি (অকারণে কাজের সৃষ্টি): নতুন নতুন অফিসে যোগ দিয়ে সাহেবের সুনজরে পড়েছ, যেন বিনা মেঘে পানি।
বিনা মেঘে বজ্রাঘাত (হঠাৎ বিপৎপাত): পিতার মৃত্যুর সংবাদ শুনে ছেলেটির বিনা মেঘে বজ্রাঘাত হল।
বিনামেঘে বজ্রপাত (হঠাৎ বিপদ) : পিতার মৃত্যু সংবাদ আমার কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই।
বিশ বাঁও জলে (সাফল্য লাভের অসম্ভাব্যতা): অপরাধ যখন আদালতে প্রমাণিত হল, তখন উদ্ধার পাওয়ার আশা বিশ বাঁও জলে।
বিষ দাঁত ভাঙা (অনিষ্ট করার শক্তি নষ্ট করা) : সাপ ধরেই সাপুড়েরা তার বিষ দাঁত ভেঙে দেয়।
বিষিয়ে উঠা (বিরূপ হওয়া): শত্রট্টর মুখে নিন্দা শুনে সালাম সাহেবের দ্বারা মন তার বিরুদ্ধে বিষিয়ে উঠল।
বিষের পুটুলি (বিদ্বেষী): বড় বউ এক বিষের পুটুলি। ছোট জা’র রূপ দেখে জ্বলে পুড়ে মরছে।
বিষবৃক্ষ (অনাচারের উৎস) : সমাজ থেকে সন্ত্রাসের বিষবৃক্ষ তুলে ফেলতে হবে।
বিসমিল্লায় গলদ (গোড়ায় গলদ): অঙ্ক তোমার মিলবে কেমন করে, বিসমিল্ল ায় যে গলদ করে বসে আছ।
বিসমিল্লায় গলদ (শুরুতেই ভুল) : বিসমিল্লায় গলদ করে কি আর জীবনের হিসাব মিলানো যায়?
বিড়াল তপস্বী (বকধার্মিক) : সমাজে বিড়াল তপস্বী লোকের অভাব নেই।
বিড়ালের আড়াই পা (বেহায়াপনা): হাজার বকলেও লাভ নেই, তার হচ্ছে বিড়ালের আড়াই পা।
বিড়ালতপস্বী (কপট সাধু): সারা জীবন ভন্ডামি, বুড়াকালে সাধুগিরি বিড়ালতপস্বী নয় তো কি!
বেগার ঠেলা (অযত্নে কাজ করা): কিছু দক্ষিণা লাভের আশায় যারা ‘নোট’ লেখেন, তাঁরা বেগার ঠেলে থাকেন।
বেল পাকিলে কাকের কি (উপভোগ করতে অক্ষম ব্যক্তির পক্ষে উৎকৃষ্ট সামগ্রীর প্রতি লোভ করা নিষ্ফল): আমি তো গরীবের ছেলে, রাজার মেয়ে বিয়ে করতে চাইলেই তো হবে না, বেল পাকলে কাকের কি?
বোঝার উপর শাকের আঁটি (অনেকের সঙ্গে সামান্য): বিয়ে বাড়িতে মওলানা সাহেব চল্লিশটি রসগোল্লা খাবার পর পাঁচটি পানতোয়া খেয়ে বোঝার উপর শাকের আঁটিই যেন রক্ষা করলেন।
বজ্র আটুনি/ফস্কা গিরো (বেশি কড়াকড়ি): ছেলেটিকে শাসনে রেখেছিল ভায়া, এখন ছাড়া পেয়ে দুরন্ত হয়ে উঠেছে: এ যেন বজ্র আঁটুনি ফস্কা গিরো।
ব্যাঙের আধুলি (অত্যল্প অর্থের অহংকার) : হাবিব ব্যাঙের আধুলি নিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।
ব্যাঙের আধুলি (সামান্য ধন): বাপু, সাহায্য করলেই যদি হাজার খানেক টাকা দাও, দুশো টাকা তো ব্যাঙের আধুলি।
ব্যাঙের সর্দি (অসম্ভব কিছু): যে সাতবার জেল খেটে এসেছে, তাকে দেখাও জেলের ভয়, ব্যাঙের আবার সর্দি।
ব্যাজোর ব্যাজোর করা (আপত্তি): যা দিলাম নাও, আর ব্যাজোর ব্যাজোর করো না।
বুদ্ধির ঢেঁকি (নির্বোধ): ছোকরা বুদ্ধির ঢেঁকি, কোন কাজর নয়।
বুদ্ধির ঢেঁকি (বোকা) : করিমের মত বুদ্ধির ঢেঁকি পরীক্ষায় এর চেয়ে ভালো রেজাল্ট করবে কি করে?
বর্ণচোরা (স্বাভাবিক বর্ণ গোপন রাখে এমন): আপনি বাপু একটা বর্ণ চোরা আম, বুঝবার যো নেই যে; আপনি তার একটা অনুরক্ত।
বসন্তের কোকিল (সুসময়ের বন্ধু) : বসন্তের কোকিল থেকে আমাদের সাবধান হওয়া উচিত।
বসন্তের কোকিল (সুসময়ের বন্ধু): সুসময়ে বসন্তের কোকিলরা চারদিকে এসে কুজন করতে থাকে।
বড় মুখ (উচ্চাশা) : বড় মুখ করে তোমাকে নিমন্ত্রণ করছি, আশা করি আসবে।
বড় মুখ (গর্ব): পিতা বড় মুখ করে ছেলের কথা বলতে আসে; কিন্তু এ কথা যেন শুনে মুখ চুন করল।
তথ্যসূত্র: পুরাতন বইয়ের দোকান/লাইব্রেরি হতে বিভিন্ন লেখকের বাংলা ব্যাকরণ বই সংগ্রহ করে তা এখানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।