প্র : রামমোহন রায় কবে কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উ : ১৭৭২ সালে, হুগলির রাধানগর নামক স্থানে (স্থানটি তাঁর পিতার নামে)
প্র : তাঁর পিতার নাম কী ছিল?
উ : রাধাকান্ত রায়।
প্র : তিনি মূরত কী হিসেবে পরিচিত ছিরেন?
উ : সমাজসংস্কারক, ধর্ম-সঙস্কারক, চিন্তাবিদ ও বহুভাষাবিদ প-িত।
প্র : তাঁর প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা কতটুকু?
উ : তিনি গুরুমশায়ের পাঠশালায় হাতেখড়ি দেন, পাটনায় আরবি ও পারসি এবং কাশীতে সংস্কৃত শিক্ষাগ্রহণ করেন।
প্র : আরবি ও পারসি ভাষায় লিখিত তাঁর প্রথম রচনা ‘তুহফাৎউল মুয়াহ্হিদ্দীন’ প্রকাশিত হয় কত সালে?
উ : ১৮০৩ সালে।
প্র : এই গ্রন্থের বিষয়বস্তু কী?
উ : একেশ্বরবাদ।
প্র : তিনি কত সালে একেশ্বরবাদ ধর্মমত অনুসারে অনুবাদ ও ভাষ্যসহ বেদান্তসূত্র ও তৎসমর্থক উপনিষদ প্রকাশে ব্রতী হন?
উ : ১৮১৫-১৮১৯ সালে।
প্র : একেশ্বর উপাসনার উদ্দেশ্যে তিনি কী প্রতিষ্ঠা করেন?
উ : আত্মীয়সভা নামের সংগঠন, ১৮১৫ খ্রিষ্টাব্দে
প্র : একেশ্বরবাদের উপর ভিত্তি করে রামমোহন যে ধর্মমত প্রবর্তন করেন তার নাম কী?
উ : ব্রাহ্মধর্মমত।
প্র : কোন মত প্রকাশের জন্য রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের সঙ্গে তাঁর বিরোধ প্রকট হয়ে ওঠে।
উ : হিন্দুধর্মেনিরাকার ব্রহ্মোপাসনাই প্রকৃষ্ঠ এই মত।
প্র : তিনি কত সালে ইউনিটারিয়ান কমিটি নামক একটি ধর্মসভা স্থাপন করেন?
উ : ১৮২১-এর।
প্র : তিনি কবে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের সহায়তায় ‘ব্রাহ্ম-সমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন?
উ : ২০-৮-১৮২৮ তারিখে।
প্র : দেশে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের জন্য ডেভিড হেয়ারের সহায়তায় তিনি কোন কলেজ প্রতিষ্ঠার কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন?
উ : ১৮১৭ সালে প্রতিষ্টিত হিন্দু কলেজ। এই কলেজের নাম পরে প্রেসিডেন্সি কলেজ হয়।
প্র : তিনি কত সালে নিজ ব্যয়ে কলকাতায় অ্যাংলো হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন?
উ : ১৮২৩ সালে।
প্র : তাঁর প্রচেষ্টায় লর্ড বেন্টিংক কর্তৃক কবে সতীদাহ প্রথা নিষিদধ ঘোষনা করা হয়?
উ : ৪-১২-১৮২৯ তারিখে।
প্র : তাঁর সম্পাদিত পত্রিকাগুলোর নাম কী?
উ : ইংরেজি বাংলা দ্বি-ভাষিক ব্রাহ্মনিক্যাল ম্যাগাজিন ‘ব্রাহ্মণ সেবধি’ (১৮২১), বাংলায় ‘সম্বাদ কৌমুদী’ (১৮২১) ও পারসি ভাষায় ‘মিরাৎ-উল-আখবার’ (১৮২২)।
প্র : ‘বেদান্তগ্রন্থ’-এর পরিচয় দাও।
উ : ‘বেদান্তগ্রন্থ’ (১৮১৫) রামমোহন রায় কর্তৃক ব্রহ্মসূত্রের অনুবাদ ও টীকা। বাংলাগদ্যের ইতিহাসে গ্রন্থটির ঐতিহাসিক মূল্য অসামান্য। পৌত্তলিকতা যে হিন্দু ধর্মের মুখ্য ব্যাপার নয়, ব্রহ্মই একমাত্র তত্ত্ব ও টীকা। বাংলাগদ্যের ইতিহাসে গ্রন্থটির ঐতিহাসিক মূল্য অসামান্য। পৌত্তলিকতা যে হিন্দু ধর্মের মুখ্য ব্যাপার নয়, ব্রহ্মই একমাত্র তত্ত্ব ও উপাস্য তা প্রমাণের উদ্দেশ্যেই এই গ্রন্থ তিনি রচনা করেন। এই গ্রন্থ অবলম্বন করে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে প্রবল বাকবিতর্ক হয়।
প্র : তিনি কীভাবে ‘রাজা’ উপাধি পান?
উ : দিল্লির বাদশাহ কর্তৃক, ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে।
প্র : ইংল্যান্ড গমণকারী প্রথম বাঙালি কে?
উ : াজা রামমোহন রায় (১৮৩১)।
প্র : তিনি কত সালে ফরাসি সম্রাট লুই ফিলিপ কর্তৃক সংবর্ধিত হন?
উ : ১৮৩২ সালে।
প্র : তাঁর লিখিত গ্রন্থগুলোর নাম কী?
উ : বেদান্তগ্রন্থ (১৮১৫), বেদান্তসার (১৮১৫), ভট্টাচার্যের সহিত বিচার (১৮১৭), গোস্বামীর সহিত বিচার (১৮১৮), সহমরণ বিষয়ক প্রবর্তক ও নিবর্তকের সম্বাদ (১৮১৮), গৌড়ীয় ব্যাকরণ (১৮৩৩) ইত্যাদি সহ ৩০টি গ্রন্থ।
প্র : ঊনবিংশ শতাব্দীতে পাঠ্যপুস্তকের বাইরে কে প্রথম গদ্যের ব্যবহার করেন?
উ : ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলা গদ্যের সূত্রপাত হয় পাঠ্যপুস্তকের জন্যই। তাই বাংলা গদ্যের প্রথশ কিছুদিন সেই পাঠ্যপুস্তকেই সীমাবদ্ধ থাকে গদ্যভঙ্গির সকল প্রয়াস। রামমোহন রায়ই তাঁর ধর্ম ও সংস্কার আন্দোলনের প্রয়োজনে পাঠ্যপুস্তকের বাইরে বাংলা গদ্য ব্যবহার করেন।
প্র : সহমরণ প্রথার বিরুদ্ধে রামমোহন কী কী গ্রন্থ রচনা করেন?
উ : উনিশ শতকের যুক্তিবাদী মননশীলতায় রামমোহন সহমরণ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোরেন। নিজস্ব মতপ্রচারের জন্য হিন্দু সমাজের গোঁড়া সংস্কারের যুক্তিহীনতা দেখাবার জন্য তিনি দুটি গ্রন্থ রচনা করেন। (ক) প্রবর্তক ও নিবর্তকের সম্বাদ (৮১৮-১৯), (খ) গোস্বামীর সহিত বিচার (১৮১৮)।
প্র : অক্ষয়কুমার দত্তের কোন্ রচনা বিদেশি রচনা অবলম্বনে লিখিত হলেও মৌলিক রচনার মর্যাদা পায়?
উ : ‘Asiatic Researches’ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রাচ্যতুত্ত্ববিদ্ হোরেস হেম্যান উইলসনের ‘Sketch on the Religious Sects of the Hindus’ রচনাটির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অক্ষয়কুমার লিখেছিলেন ‘ভারতবর্ষীয় উপাসক সম্প্রদায়’। ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম ভাগ এবং ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় ভাগ প্রকাশিত হয়। রচনার সাবলীলতার জন্য গ্রন্থটি মৌলিক রচনার গুরুত্ব পায়।
প্র : বিদ্যাসাগর কোন্ পত্রিকার সম্পাদনা করেছিলেন?
উ : অক্ষয়কুমার দত্তের পর কিছুদিন বিদ্যাসাগর ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
প্র : বাংলায় প্রবন্ধরচনার প্রথম কৃতিত্ব কার ?
উ : রাজা রামমোহন রায়ের।
প্র : রামমোহন রায়ের পরিচয় কী?
উ : সমাজসংস্কারক এবং বাংরা গদ্যের প্রস্তুতিকালনি লেখকদের একজন।
প্র : রামমোহন রচিত ব্যাকরণ গ্রন্থের নাম কী?
উ : গৌড়ীয় ব্যাকরণ (১৮৩৩)।
প্র : ব্যাকরণ রচনায় রামমোহন স্মরণীয় কেন?
উ : রামমোহন রায় প্রথম বাঙালি যিনি বাংলা ভাষায় প্রথম বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন।
প্র : বিবিসির জরিপকৃত (২০০৪) সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় তাঁর স্থান কত?
উ : দশম।
প্র : তাঁর মৃত্যু কোথায় কত সালে?
উ : ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে মৃত্যু; ২৮-৯-১৮৩৩। সেখানেই সমাহিত।