Friday, October 4, 2024

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন

প্র : রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উ : ৯ই ডিসেম্বর, ১৮৮০, পায়রাবন্দ গ্রাম, রংপুরে।
প্র : তিনি মূরত কী হিসেবে পরিচিত?
উ : মুসলিম নারীজাগরণের অগ্রদূত।
প্র : তাঁর ফৈতৃক নাম কী?
উ : রোকেয়া খাতুন, বিবাহের পরে নামের শেষে স্বামীর নাম সাখাওয়াত হোসেন যুক্ত হয়।
প্র : তিনি প্রথমে কোন নামে লিখতেন?
উ : মিসেস আর এস হোসেন নামে।
প্র : তাঁর পিতার নাম কী ছিল?
উ : আবু আলি সাবের।
প্র : শৈশবে তিনি কাদের অনুপ্রেরণা পান?
উ : বড় ভাই আবুল আসাদ ইব্রাহিম ও বড় বোন করিমুন্নেসা খানমের প্রভাবে রোকেয়া শৈশব থেকেই কুসংস্কার ঘৃণা করতে শেখেন ও বিদ্যাশিক্ষা লাভ করেন।
প্র : তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কতটুকু?
উ : স্বশিক্ষিত।
প্র : তিনি কোথায় বসে সাহিত্য সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন?
উ : ভাগলপুরে।
প্র : কত সালে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়?
উ : ১৯০৯ সালে।
প্র : স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি কোন কাজে মনোনিবেশ করেন?
উ : সমাজসেবা ও সমাজে নারী শিক্ষা বিস্তারে।
প্র : কার নামে তিনি ভাগলপুরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন?
উ : স্বামীর নামে।
প্র : তিনি কত সালে কলকাতায় গমন করেন?
উ : ১৯১০ সালে।
প্র : তিনি কত সালে কলকাতায় সাখাওয়াত মেমোরিয়াল উর্দু প্রাইমারি স্কুল স্থাপন করেন?
উ : ১৬ই মার্চ, ১৯১১।
প্র : প্রাইমারি স্কুলটি কত সালে তিনি উচ্চ ইংরেজি গার্লস স্কুলে রূপান্তরিত করেন?
উ : ১৯৩১ সালে। আজীবন এই স্কুলের প্রধান শিক্ষয়িত্রী এবং সুপারিনটেনডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন।
প্র : স্কুলের জন্য তিনি কীভাবে ছাত্রী সংগ্রহ করতেন?
উ : মহলআয়-মহল্লায় ঘুরে।
প্র : নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার লখ্ষ্যে তিনি কোন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন, কবে?
উ : আঞ্জুমান খাওয়াতিনে ইসলাম (মুসলিম মহিলা সমিতি); ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে।
প্র : তিনি কোন বিষয়ে লেখনী ধারণ করেন?
উ : মুসলিম সমাজের কুসংস্কার ও জড়তা দূর করার জন্য।
প্র : তাঁর সব রচনাতে সমাজ-জীবনের কোন বোধটি উৎসারিত?
উ : বেদনাবোধ।
প্র : রোকেয়ার কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখ?
উ : মতিচুর (১ম খন্ড-১৯৪০, ২য় খন্ড-১৯২২), অবরোধবাসিনী (১৯৩১) ও ঝঁষঃধহধ’ং উৎবধস.
প্র : ‘অবরোধবাসিনী’ গ্রন্থের পরিচয় দাও।
উ : ‘াবরোধবাসিনী’ (১৯৩১) রোকেয়ার একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। কতগুলি ঐতিহাসিক ও চাক্ষুষ সত্য ঘটনার হাসি-কান্না নিয়ে এই গ্রন্থের কাহিনি রচিত। নকশাধর্মী ছোট ছোট রচনাগুলির মধ্যে ফুঠে উঠেছে অবরুদ্ধ নারীর মর্মান্তিক জীবনকথা। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন তাঁর এই গ্রন্থের বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, লক্ষ্মৌ, লাহোর, পাঞ্জাব, দিল্লি ও আলিগড়ের সম্ভ্রান্ত ও উচ্চবিত্ত মুসলমান পরিবারে পর্দার নামে অবরোধের অমানবিক ঘটনার ৪৭টি চিত্র তুলে ধরেছেন। রোকেয়া নিজে এগুলোকে ঐতিহাসিক ও চাক্ষুষ সত্য ঘটনার হাসিকান্না’ বলে অভিহিত করেছেন। এই লেখাগুলো কলকাতার মাসিক ‘মোহাম্মদী’র মহিলা পাতায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় ১৯২৮ সাল থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত। ১৯৩১ সালে রোকেয়ার এই সৃষ্টিকর্ম ‘াবরোধবাসিনী’ নামে গ্রন্থকারের প্রকাশিত হয়।
প্র : তাঁর উপন্যাসের নাম কী?
উ : পদ্মরাগ (১৯২৪)।
প্র : ‘পদ্মরাগ’ গ্রন্থের পচিয় দাও।
উ : ‘পদ্মরাগ’ (১৯২৪) রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রচিত উপন্যাস। আসলে একে উপন্যাস না বলে উপন্যাসোপম গদ্য-আখ্যায়িকা বলাই ভালো। কেননা উপন্যাসের গাঁথুনি এখানে নেই, শিল্প হিসেবেও অসফল। তবে ‘পদ্মরাগে’র মূল্য অন্যত্র। প্রথমত কোনো মুসরিম নারীর রচনা; দ্বিতীয়ত মুসলিম সমাজের অতœঃস্থিত ক্লেদকে এমনভাবে প্রকাশ করা হয়েছে যা কোনো হিন্দু লেখকের পক্ষে সম্ভব ছিল না; তৃতীয়ত অসম্প্রদায়িকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আছে এ জন্যে। লতিফ ও সিদ্দিকার প্রেমচিত্র আছে এখানে। ঈশান কম্পাউন্ডারের ভাষায় এবং ‘তারিণীভবন’কে কেন্দ্র করে পদ্মরাগে’ বলা হয়েছে যে, হিন্দু-মুসলিম-ব্রাহ্ম-খ্রিষ্টান একই মাতৃগর্ভজাত। একটি চমৎকার গল্প আছে এ গ্রন্থের অবতারণা অংশে। এক মুসলিম ধর্মপিপাসু দরবেশের কাছে এলো শিক্ষা নিতে। দরবেশ তাকে নিজের হিন্দু গুরুর কাছে নিয়ে গেলেন। সেই হিন্দুগুরু আবার তাদের নিয়ে গেলেন নিজের মুসলিম গুরুর কাছে। এভাবে বোঝানো হলো প্রকৃত শিক্ষার মধ্যে সম্প্রদায়জ্ঞান থাকে না। জ্ঞানের আলোতে কূপম-ূকতা দূর করতে হয়। ‘পদ্মরাগ’ উৎসর্গ করা হয় রোকেয়ার জ্যেষ্ঠভ্রাতা আবুল আসাদ ইব্রাহিমকে।
প্র : কোন কোন পত্রিকায় তাঁর লেখাগুলো প্রকাশিত হয়?
উ : নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী ইত্যাদি। পত্রিকায়।
প্র : বিবিসির জরিপকৃত (২০০৪) সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালির তারিকায় তাঁর স্থান কত?
উ : ষষ্ঠ।
প্র : তিনি কোন আন্দোলনের পথিকৃৎ?
উ : মুসরিম নারীমুক্তি আন্দোলনের।
প্র : তাঁর কবে মৃত্যু হয়?
উ : ৯ই ডিসেম্বর, ১৯৩২।

Related Articles

Latest Articles