Friday, October 4, 2024

শওকত ওসমান

প্র : শওকত ওসমান কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উ : ১৯১৭ সালের ২রা জানুয়ারি; হুগলি।
প্র : শওকত ওসমানের প্রকৃত নাম কী?
উ : শেখ আজিজুর রহমান।
প্র : তিনি মূলত কী হিসেবে পরিচিত :
উ : কথাসাহিত্যক।
প্র : তাঁর কোন রচনাটি ১৯৪৬ সালে দৈনিক আজাদের সাহিত্য সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়?
উ : উপন্যাস ‘বনি আদম’।
প্র : গ্রন্থাকারে প্রকাশিত তাঁর প্রতশ পুস্তক কোনটি?
উ : জননী (১৯৬১)।
প্র : শওকত ওসমানের ‘জননী’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : সন্তানের মঙ্গলাকাক্সক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য একজন মা (গোপনে) যে কোনো পথ অবলম্বন করতে পারে শওকত ওসমানের ‘জননী’ (১৯৬১) উপন্যাসে সে কথাই ব্যক্ত। পটভূমি পশ্চিমবঙ্গের মহেশডাঙ্গা। দরিয়া-বিবি সেই পল্লী জননী যে সন্তান মোনাদিকে আর্থিক সহায়তা দেবার জন্য ইয়াকুবের শয্যাসঙ্গিনী হয়। ইয়াকুবের ঔরষে তার গর্ভে সন্তান এলে ওই গর্ভস্থ সন্তানকেও দরিয়া অসীম মমতায় সকল ভ্রুকুটি সহ্য করে নিরাপদে জন্মদানের মাধ্যমে আদর্শ জননীর দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এই মূকাহিনির পাশাপাশি উপন্যাসে এসেছে মুসলিম সমাজের শরিয়তি দ্বন্দ্ব, বিত্তবানের স্বার্থপরতা, গ্রামের দরিদ্র মানুষের পারস্পরিক ঝগড়া ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন। উল্লেখযোগ্য চরিত্র : দরিয়া-বিবি, আজহার, মোনাদি, ইয়াকুব, চন্দ্রকোটাল প্রমুখ।
প্র : কোন গ্রন্থ রচনার জন্য তাঁকে আদমজি পুরস্কার দেয়া হয়।
উ : ক্রীতদাসের হাসি।
প্র : ‘ক্রীতদাসের হাসি’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : শওকত ওসমানের ‘ক্রীতদাসের হাসি’ (১৯৬২) উপন্যাসটিতে প্রতীকাশ্রয়ে তৎকালনি
পাকিস্তানিদের বিরূপ শাসনের সমালোচনা করা হয়েছে। বাগদাদের বাদশা হারুন অর রশিদ অত্যাচারী। সে ক্রীতদাস তাতারি ও বাঁদি মেহেরজানের প্রণয়ে বাধা সৃষ্টি এবং তাতারিকে গৃহবন্দি ও অত্যাচার করে। তাতারি আমৃত্যু বাদশা হারুনের নির্যাতনের প্রতিবাদ করে যায়। এখানে তাতারি বাঙালি জনতার এবং বাদশা হারুন আইয়ুব খানের প্রতীক। তাতারির হাসি উপন্যাসে বাঙালির স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। শওকত ওসমানের সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাস বলে স্বীকৃত।
প্র : তাঁর প্রকাশিত প্রধান গ্রন্থের নাম কী?
উ : প্রবন্ধ : সংস্কৃতির চড়াই উৎরাই (১৯৮৫), মুসরিম মানসের রূপান্তর (১৯৮৬)। উপন্যাস : ক্রতিাদাসের হাসি (১৯৬২), সমাগম (১৯৭৬), চৌরসদ্ধি (১৯৬৮), রাজা উপাখ্যান (১৯৭০), জাহান্নম হইতে বিদায় (১৯৭১), দুই সৈনিক (১৯৭৩), নেকড়ে অরণ্য (১৯৭৩), পতঙ্গ পিঞ্জর (১৯৮৩), রাজসাক্ষী (১৯৮৫), জলাংগী (১৯৮৬), পুরাতন খঞ্জর (১৯৮৭)। গল্প : পিঁজরাপোল (১৩৫৮), জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প (১৩৫৯), প্রস্তুর ফলক (১৯৪৬), উভশৃঙ্দ (১৩৭৫), শ্রেষ্ঠ গল্প (১৯৭৪), জন্ম যদি তব বঙ্গে (১৯৭৫), ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দী (১৯৯০) ইত্যাদি। নাটক : আমলার মামলা (১৯৪৯), তস্কর ও লস্কর (১৯৫৩), বাগদাদের কবি (১৩৫৯), পূর্ণ স্বাধীনতা চূর্ণ স্বাধীনতা (১৯৯০)। শিশুতোষ : ওটেন সাহেবের বাংলো (১৯৪৪), তারা দুই জন (১৯৪৪), ক্ষুদে সোশালিস্ট (১৯৭৩)।
প্র : তিনি কী কী পুরস্কার লাভ করেন?
উ : বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬২), আদমজি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬), একুশের পদক (১৯৮৩), ফিলিপস পুরস্কার (১৯৯১)।
প্র : কোন গ্রন্থের জন্য তিনি ফিলপস পুরস্কার লাভ করেন?
উ : ‘ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী’ গল্পগ্রন্থের জন্য।
প্র : শওকত ওসমানের কালোত্তীর্ণ উপন্যাস কোনটি? এর ধরন কী?
উ : ক্রীতদাসের হাসি। প্রতীকাশ্রয়ী উপন্যাস।
প্র : জননী ও ক্রীতদাসের হাসির ইংরেজি অনুবাদ কোথা থেকে প্রকাশিত হয়।
উ : ওসমান জামালকৃত জননী (ইংরেজিতেও একই নাম রাখা হয়েছে) অক্সফোর্ড (১৯৯৩) ও কবীর চৌধুরীকৃত এ স্লেভ লাফস (১৯৭৬) দিল্লি থেকে প্রকাশিত হয়।
প্র : তিনি কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উ : ১৯৯৮ সালের ১৪ই মে।

Related Articles

Latest Articles