প্র : মহীদুল্লা কায়সারের জন্ম সালে কত?
উ : ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ১৯২৭; ফেনিতে।
প্র : তিনি মূলত কী হিসেবে পরিচিত?
উ : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক।
প্র : তাঁর পুরো নাম কী ছিল?
উ : আবু নঈম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
প্র : তাঁর পিতার নাম কী ছিল?
উ : হাবীবুল্লাহ।
প্র : জহির রায়হানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী?
উ : উভয়ে সহোদর ভাই।
প্র : তিনি কোন রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন?
উ : মার্কসবাদ-লেলিনবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বামপন্থী ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন এবং পরে কমিউনিস্ট রাজনীতিতে যাগ দেন।
প্র : তিনি কোন দল গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন?
উ : গণতান্ত্রিক যুবলীগ (সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭)।
প্র : পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য নির্বাচিত হন কত সালে?
উ : ১৯৫১ সালে।
প্র : তিনি প্রথম কত সালে গ্রেফতার হয়ে জেলে যান?
উ : ১৯৫২ সালে।
প্র : তিনি প্রথম কত সালে গ্রেফতার হয়ে জেলে যান?
উ : ১৯৫২ সালে।
প্র : তিনি কোন পত্রিকায় যোগদানের মধ্যদিয়ে সাংবাদিতার পেশা গ্রহণ করেন?
উ : সাপ্তাহিক ইত্তেফাক (১৯৪৯)।
প্র : তিনি কত সালে দৈনিক সংবাদের সহকারী সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন?
উ : ১৯৫৮ সালে।
প্র : তিনি কোন শিরোনামে উপসম্পাদকীয় রচনা করেন?
উ : ‘রাজনৈতিক পরিক্রমা’, ‘বিচিত্র কথা’।
প্র : তাঁর উপন্যাসে বাঙালি জীবনের কোন দিকটি উজ্জ্বলভাবে প্রকাশিত?
উ : বাঙালি জীবনের আশা-আকাক্সক্ষা, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও সংগ্রামী চেতনা।
প্র : তিনি কোন দুটি উপন্যাস লিখে খ্যাত হন?
উ : সারেং বৌ (১৯৬২) উপন্যাসে বাংলাদেশের সমুদ্র-উপকূলবর্তী জনপদের বিশ্বস্ত চিত্র আছে। কদম সারেং সৎ বলে সহকর্মীদের মত বাড়ি ও দালান করতে পারে নি। স্ত্রী নবিতুনকে নিয়ে আর্থিক কষ্টের মধ্যেও সুখে থাকে সে। প্রকৃতির বিরুদ্ধতায় সারেং যখন দীর্ঘ দিন নিখোজ, সেই সময় যুবতী নবিতুনের উপর দারিদ্র্য ও লোলুপ সমাজপতিদের লোলুপতা নেমে আসে। দাম্পত্য আদর্শনিষ্ঠ বলে নবিতুন সব কিছু পরাজিত করতে পারে। সারেং কদম যখন ফিরে আসে তখন সাগরের বুকে সে চরম মাত্রায় পিপাসিত। এ অবস্থায় ধর্মীয় বিধি লংঘন করে নবিতুন নিজের স্তন্যদুগ্ধ পান করিয়ে স্বামীকে বাঁচতে সাহায্য করে। এই উপন্যাসে সব সংস্কার তুচ্ছ করে মানুষকে জয়ী দেখানো হয়েছে।
প্র : ‘সংশপ্তক’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : সংশপ্তক শব্দটি মহাভারতের। এর অর্থে বোঝায়, যে সৈনিকেরা জীবনমরণ পণ করে যুদ্ধে লড়ে। পালিয়ে আসে না। শহীদুল্লা কায়সার এ ধরনের চেতনাকে ধারণ করেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পূর্ববর্তী কাল থেকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের পূর্বকাল অবধি বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক পরিবর্তন ও রূপান্তর উপন্যাস ‘সংশপ্তকে’ (১৯৬৫) ধারণ করেছেন। ‘সংশপ্তক’কে (১৯৬৫) ধারণ করেছেন। ‘সংশপ্তক’কে তাই মহাকাব্যিক উপন্যাস বলা হয়। হিন্দু-মুসলিম সম্মিলিত জীবনযাপন, অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধ এ উপন্যাসের অন্যতম বর্ণিত বিষয়। এখানে ঢাকা ও কলকাতার নাগরিক পরিবেশের সঙ্গে বাকুলিয়া ও তালতলি গ্রামের গ্রামীণ পরিবেশের প্রতীকে সমগ্র বাংলাদেশের জীবনযাপন তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্বযুদ্ধ, দাঙ্গা, দুর্ভিক্ষ, সাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদি প্রাসঙ্গিকভাবেই উপন্যাসে এসেছে। উল্লেখযোগ্য চরিত্র : রাবেয়া খাতুন (রাবু), জাহেদ, সেকেন্দার, মালু, হুরমতি, লেকু, রমজান, রামদয়াল ইত্যাদি। এ উপন্যাসে বাংলার জনগণ সংশপ্তকের মতো সর্বদা সংস্কৃতি, সম্প্রীতি ও মানুষ্যত্বে রক্ষায় সংগ্রামশীল।
প্র : ‘রাজবন্দীর রোজনামচা’ নামক তাঁর স্মৃতিকথা কবে প্রকাশিত হয়?
উ : ১৯৬২ সালে।
প্র : তাঁর ভ্রমণবৃত্তান্তের নাম কী?
উ : ‘পেশোয়ার থেকে তাসখন্দ’ (১৯৬৬)।
প্র : তিনি কী কী পুরস্কার লাভ করেন?
উ : আমদজি পুরস্কার (১৯৬২), বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬২) (দুটোই সারেং বৌ উপন্যাসের জন্য)।
প্র : তিনি কত সালে কীভাবে নিখোঁজ হন?
উ : ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর এদেশীয় দোসর আলবদর বাহিনীর সদস্যগণ তাঁর ঢাকার কায়েতটুলির বাসভবন থেকে তাঁকে অপহরণ করে কনিয়ে যায়। এরপর তাঁর আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায় নি।