প্র : সতীনাথ ভাদুড়ীর জন্ম কবে, কোথায়?
উ : ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে সেপ্টেম্বর, বিহার প্রদেশের পূর্ণিয়া নামক স্থানে।
প্র : তিনি কোন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন?
উ : আইনে ডিগ্রি নিয়ে পূর্ণিয়াতে ওকালতি করেন। পরে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে কংগ্রেস দলে যোগ দেন এবং ওকালতি ত্যাগ করেন। ১৯৪০-’৪২ পর্যন্ত রাজনীতির দায়ে জেলে ছিলেন। উল্লেখ্য ১৯৪২ সালে ব্রিটিশ-বিরোধী ‘ভারত-ছড়ো’ আন্দোলন হয়। দলের সঙ্গে মতের মিল না হলে ১৯৪৪ সালে কংগ্রেস পরিত্যাগ এবংএ সময় থেকে ব্যাপকভাবে সাহিত্যচর্চা আরম্ভ করেন।
প্র : তিনি কী হিসেবে পরিচিত?
উ : ঔপন্যাসিক। তাঁর উল্লেখযোগ্য দুটো উপন্যাস : জাগরী (১৯৪৬) ও ঢোঁড়াইচরিত মানস (দুই খন্ড; ১৯৪৯, ১৯৫১)।
প্র : ‘জাগরী’ উপন্যাস সম্পর্কে লেখ।
উ : ‘জাগরী’ (১৯৪৬) সতীনাথ ভাদুড়ীর প্রথম উপন্যাস, ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ভারত-ছাড় আন্দোলনের পটভূমিকায় রচিত। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালি শিক্ষিত সমাজ এই উপন্যাসটিকে অভ্যর্থনা জানান। গঠনকৌশল, রিত্রসৃষ্টি ও বিষয়বস্তু-সমস্ত দিক থেকেই এই গ্রন্থটি একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাসরূপে স্বীকৃত। রাজনীতির আবর্তে চক্রায়িত এক পরিবার- মাতা, পিতা ও দুই পুত্র। এক পুত্রের সাক্ষ্যের ফলে আরেক পুত্রের মৃত্যুদ-ের ঘটনা চারটি চরিত্রের স্বগোক্তির মধ্য দিয়ে উদ্ভাসিত হয়েছে।
প্র : ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ দুই খন্ডে প্রকাশিত (১ম খন্ড ১৯৪৯, ২য় খন্ড ১৯৫১)। বিহারের শহর বিরানিয়া, তার থেকে কিছু দূরে তাৎমাটুলি। তাৎমাদের বৃত্তি ঘরামি আর কুয়োর বালি ছাঁকা। তারা জাতে তাঁতি। তবে পাশেই ধাঙ্গড়টুলি। এই পরিবেশে পিতৃহীন, মাতৃপরিত্যক্ত ঢোঁড়াই বড়ো হয়। এই তাৎমা ঢোঁড়াইকে লেখক গড়ে তুলেছেন রামচন্দ্রের নতুন সংস্করণ করে। স্বাধীনতা আন্দোলনের শেষপর্ব এর কালপরিধি। সমাজের হ্নিতম স্তরে রাজনীতিক চেতনা কীভাবে প্রবেশ করে বদলে দেয় মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, পরিবর্তিত করে এক ঢোঁড়াইকে ‘রামায়ণজী’তে, তার এক অসাধারণ আখ্যান এই গ্রন্থ। এই কাহিনিতে অন্তর্লীন হয়ে আছে তুলসীদাসের রামচরিতমানস। রাজনীতি ও সমাজ পরিবর্তন ও সমাজের অন্ত্যজ মানুষের বিশ্বস্ত রূপায়ণ এবং রামচরিমানসের সঙ্গে আধুনিক কহিনির অর্ন্তবয়ন এই তিনদিক থেকে এই আখ্যান বাংলা সাহিতের শ্রেষ্ঠ রচনাগুলির অন্যতম।
প্র : কোন উপন্যাসের জন্য তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার লঅভ করেন?
উ : জাগরী; ১৯৫০ সাল।
প্র : তিনি কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উ : ১৯৬৫ সালে।