Friday, October 4, 2024

সত্যেন সেন

প্র : সত্যেন সেনের জন্মসন কত?
উ : ১৯০৭।
প্র : তাঁর জন্ম স্থান কোথায়?
উ : সোনারঙ গ্রাম, বিক্রমপুর।
প্র : তিনি মূলত কী ছিলেন?
উ : সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ।
প্র : তিনি কোন দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?
উ : মার্কসবাদে দীক্ষাগ্রহণ করেন এবং কমিউনিষ্ট পার্টিতে যোগ দেন।
প্র : তাঁর গ্রন্থের মধ্যে কোন বিষয়গুলো লক্ষণীয়?
উ : সমাজ, রাজনীতি, সমকালনি ও অতীত ইতিহাস, মার্কসবাদের শ্রেণি সংগ্রাম ও গণমানুষের মুক্তির বাণী তাঁর সাহিত্যকর্মে উজ্জ্বলভাবে প্রকাশিত।
প্র : তিনি কোন সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন?
উ : ‘উদীচী’ (১৯৬৮)।
প্র : তাঁর গ্রন্থাবলির নাম কী?
উ : উপন্যাস : ভোরের বিহঙ্গী (১৩৬৬), অভিশপ্ত নগরী (১৩৭৫), পাশের সন্তান (১৯৬৯), রুদ্ধদ্বার মুক্তপ্রাণ (১৯৭৩), পদচিহ্ন (১৩৭৫), আলবেরুনী (১৩৭৬), সাত নম্বর ওয়ার্ড (১৩৭৬)। ইতিহাস : মহাবিদ্রোহের কাহিনী (১৯৫৮), প্রতিরোধ সংগ্রামে বাংলাদেশ (১৯৭১), বাংলাদেশের কৃষকের সংগ্রাম (১৯৭৬) । শিশু সাহিত্য : পাতাবাহার (১৩৭৪), অভিযাত্রী (১৩৭৬)।
প্র : ‘আলবেরুনী’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত সত্যের সেন রচিত জীবনভিত্তিক উপন্যাস ‘আলবেরুনী’রপা-ুলিপি লিখেচিলেন জেলে বসে। বইটি তিনি লিখেছেন হাজার বছর আগে ভরত-সন্ধানে আসা আরব সাগরের দক্ষিণের দেশ খোরজমের উরগঞ্জ শহরের বাসিন্দা, গণিতবিদ, বৈজ্ঞানিক, শিক্ষানুরাগী ও দেশপ্রেমিক আবু রায়হান বিন আহমদ আলবেরুনীকে নিয়ে। গ্রন্থটিতে লেখক আলবেরুনীকে দেশ-কাল, জাতীয়তা ও ধর্মের সঙ্দীর্ণ গ-ি থেকে মুক্ত জগৎ বিখ্যাত এক মানবতাবাদী প-িত হিসেবে অঙ্কন করেছেন।
প্র : সত্যের সেনের ‘অভিশপ্ত নগরী’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : বাইবেলের ‘বুক অব দ্য প্রফেট : যেরেমিয়া খন্ড’ অবলম্বনে অভিশপ্ত নগরী (১৯৬৭) রচিত। বাংলাদেশের বাংলা সাহিত্যে সত্যেন সেনই প্রথম ব্যক্তিত্ব যিনি বাইবেলের কোনো কাহিনিকে আশ্রয় করে উপন্যাস রচনা করেন। তবে এটা কোন ধর্মকথার প্রলম্বিত রূপ নয়। বাইবেলের কাহিনিকে আশ্রয় করে রাজতন্ত্র ও পুরোহিততন্ত্রের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং সেই দ্বন্দ্বে মেহনতি মানুষের প্রতিবাদ ও বিদ্রোহ রূপায়ণে সত্যেন সেন সফল। উপন্যাসে যেরেমিয়া, রাজা যিহোয়াকিম, নেবুকাডনাজার প্রমুখ ঐতিহাসিক চরিত্রের উল্লেখ আছে। জীবনের প্রবহমান ধারা রূপ দিতে গিয়ে মহাকাব্যিক ভাষারীতি ও অলঙ্কার গৃহীত হয়েছে এই উপন্যাসে।
প্র : ‘পাপের সন্তান’ উপন্যাস সম্পর্কে লেখ।
উ : ‘অভিশপ্ত নগরী’র দ্বিতীয় খন্ড হিসেবে পরিকল্পিত ‘পাপের সন্তান’ (১৯৬৯) শুধু সত্যেন সেনেরই সেরা সৃষ্টি নয়, বাংলা ভাষায় লিখিত একটি শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। এ উপন্যাসের জন্য লেখক আদমজি পুরস্কার (১৯৭০) লাভ করেন। ‘অভিশপ্ত নগরী’তে যিরুজালেম নগরী পতনের কথা আছে। ‘পাপের সন্তানে’ সেই পতনের প্রায় পঞ্চাশ বছর পরের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত। এই দীর্ঘ সময়ে ইহুদিদের সঙ্গে অন্য ধর্ম-জাতির অনেকেরই বিয়ে এবং সন্তান জন্মের ঘটনা ঘটে। পরজাতি স্ত্রীর গর্ভে জন্মগ্রহণকারী ইহুদি সন্তানদের পাপের সন্তান আখ্যা দিয়ে তাদের ধ্বংস কামনা করা হয়। এই উপন্যাসের প্রধান পাত্র-পাত্রী মিকা ও শদরা ধর্মীয় ও সামাজিক এই বিধি নিষেধ অতিক্রম করে নীলনদের তীরে এসে নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে চায়। এই নতুনের প্রতি ইঙ্গিতই উপন্যাসের মূল কথা।
প্র : তাঁর রচিত পাপের সন্তান ও অভিশপ্ত নগরী উপন্যাস দুটি বিখ্যাত কেন?
উ : এই উপন্যাস দুটোর কাহিনি গৃহীত হয়েছে বাইবেল থেকে। বাংরাদেশে বাইবেল থেকে কাহিনি নিয়ে উপন্রাস রচনা এই প্রথম।
প্র : তিনি কী পুরস্কার লঅভ করেন?
উ : উপন্যাস বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭০), একুশে পদক (মরণোত্তর; ১৯৮৬)।
প্র : তাঁর মৃত্যু সাল কত?
উ : ৫ই ডিসেম্বর ১৯৮১; শান্তিনিকেতন।

Related Articles

Latest Articles