বাগধারা

স দিয়ে বাগধারা ও বাক্য প্রয়োগ তৈরি

সকার বকার করা (গালি দেওয়া): সকলের সামনে সকার বকার করো না বলছি।
সুখের পায়রা (বিলাসী) : সংসারে কেউ কেউ সুখের পায়রা থেকে যায়।
সুখের পায়রা (বিলাসী): আমি একাই খেটে মরি, আর সব তো সুখের পায়রা।
সাক্ষী গোপাল (ব্যক্তিত্বহীন নিষ্ক্রিয় দর্শক) : যারা সাক্ষী গোপাল তাদের দিয়ে কোন কাজ হয় না।
সাক্ষীগোপাল (কর্তৃত্বহীন দর্শকমাত্র): আমার পুত্রই এখন সংসার পরিচালনা করে, আমি শুধু সাক্ষীগোপাল।
সাত খুন মাফ (অত্যধিক প্রশ্রয়) : মায়ের কাছে সন্তানের সাত খুন মাফ হয়ে যায়।
সাত খুন মাফ (গুরুতর অপরাধেও অব্যাহতি লাভ): হেড মাস্টারের ছেলে বলেই তোমার সাত খুন মাপ হবে, এমন মনেও করো না।
সাত জন্মে (কখনও): কবি ছেলে তুমি তোমার মুখে এমন কথা? এ ধরনের উক্তি আমি সাত জন্মেও শুনিনি?
সাত পাঁচ ভাবা (নানারকম অন্ত): তাঁকে কথা শোনাতেই গিয়েছিলাম, কিন্তু সাত পাঁচ ভেবে না বলেই চলে এলাম।
সাতেও নয়, পাঁচেও নয় (নির্লিপ্ত): বাড়ির কর্তা নিরীহ মানুষ, কারো সাতেও নয়, পাঁচেও নয়।
সাত-পাঁচ (বিভিন্ন রকম কথা) : সাত-পাঁচ বুঝিয়ে আমাকে বোকা বানাবার চেষ্টা করছো কেন?
সাত-সতেরো (আবোল-তাবোল) : সাত-সতেরো না বলে তাড়াতাড়ি আসল কথাটি বলো।
সাতসতেরো (সাত পাঁচ রকম আজেবাজে কথা): হাতে একটি টাকাও নেই, বসে বসে সাতসতেরো ভাবছি বাজার করব কি দিয়ে।
সাপে নেউলে (শত্রট্টভাব): দুই ভাইয়ের এখন সাপে নেউলে সম্বন্ধ।
সাপে-নেউলে (ভীষণ শত্রুতা) : বড়ভাই ও ছোটভাইয়ের মধ্যে সাপে নেউল সম্পর্ক।
সাপের ছুঁচো গেলা (অনিচ্ছায় বাধ্য হয়ে কাজ করা): বাজারে একশত টাকার জিনিস কিনতে গিয়ে আজহার সাহেব স্ত্রীর অনুরোধে পাঁচশত টাকার জিনিস কিনতে বাধ্য হয়ে ছুঁচো গেলার মত কাজ করলেন।
সাপের পাঁচ পা দেখা (অহংকারী হওয়া) : বিএ পাস করে নান্টু যেন সাপের পাঁচ পা দেখেছে।
সাপের পাঁচ পা দেখা (গর্বান্ধ হওয়া): চাকরিতে প্রমোশন পেয়ে রহিম খান সাপের পাঁচ পা দেখতেছেন।
সাফাই গাওয়া (দোষ এড়ানোর চেষ্টা) : তোমার মেয়ের সাফাই গাওয়া বন্ধ কর।
সাফাই গাওয়া (দোষ স্থালনের চেষ্টা): বাপু হে, তোমার অপকর্মের ফিরিস্তি সবই পেয়েছি, সাফাই গাইলে কি হবে।
সাবধানের মার নেই (সতর্কতা অবলম্বন করলে বিপদ নেই): অর্থমন্ত্রী মহোদয় বাজেট উত্থাপনের আগে বারবার দেখলেন, কেননা সাবধানের মার নেই।
সাবধানের মার নেই (সতর্কতায় বিপদ নেই) : সব সময় পানি ফুটিয়ে খাবে কারণ সাবধানের মার নেই।
সেয়ানে সেয়ানে (চালাকে চালাকে) : সোহরাব-রুস্তমের লড়াই ছিল সেয়ানে সেয়ানে লড়াই।
সেয়ানে সেয়ানে (যোগ্যে যোগ্যে): সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি হয়, নব প্যাক্টের আশা নেই।
সোনা বাহির আঁচলে গেরো (মূল্যবান বস্তুর বদলে মূল্যহীন বস্তুর আদর): মান-সম্মান ত্যাগ করে তুচ্ছ প্রাণের প্রতি এই মমতা সোনা বাহির আঁচলে গেরোর সামিল।
সোনার চাঁদ (আদরের ধন) : মায়ের কাছে সন্তান সোনার চাঁদের চেয়েও প্রিয়।
সোনার চাঁদ (আদরের পাত্র): সোনার চাঁদ নাতিটিকে চৌধুরী সাহেব রক্ষা কবচের মত আগলে রেখেছেন।
সোনার পাথর বাটি (অসম্ভব বস্তু) : পড়ালেখা না করলে পরীক্ষায় পাস তোমার কাছে সোনার পাথর বাটি হয়ে দাঁড়াবে।
সোনার পাথর বাটি (অসম্ভব বস্তু): গল্পটি তোমার একদম বানানো, বাস্তবতার লেশমাত্র নেই, সোনার পাথর বাটির মতই আজগুবি।
সোনায় সোহাগা (ভালর সাথে ভালর মিল): পাত্রীটিও ভাল, পাত্রও বেশ-একেবারে সোনায় সোহাগা।
সোনায় সোহাগা (সুন্দর মিলন) : যেমন বর, তেমনি কনে, এ যেন সোনায় সোহাগা।
স্বখাত সলিল (নিজের বিপদ ডাকা): তিনি রাতারাতি ধনী হতে গিয়ে স্বখাত সলিলে ডুবে গেলেন।
সবে ধন নীলমনি (একমাত্র অবলম্বন): সবে ধন নীলমনি পুত্রকে হারিয়ে ওয়াজেদ সাহেব শোকাতুর হয়েছেন।
স্বর্গের সিড়ি (শ্রেষ্ঠ সুখ লাভের উপায়) : মায়ের দোয়া সন্তানের জন্য স্বর্গের সিঁড়ি।
সরিষার ফুল দেখা (চোখে আঁধার দেখা): সময় থাকতে ভালভাবে তৈরি হওয়া ভাল, নচেৎ পরীক্ষার হলে বসে সরিষার ফুল দেখাই সার হবে।
সরফরাজি চাল (বাইরে মিত্রতা): সেদিন আদালতে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিলে, আর আজ বেশ সরফরাজি চাল চালছ।
সরষে ফুল দেখা (বিপদে দিশেহারা হওয়া) : সারাবছর পড়াশুনা না করে পরীক্ষার সময় আমি এখন চোখে সরষের ফুল দেখছি।
স-সে-মি-রা অবস্থা (কান্ডজ্ঞানহীন অবস্থা): তোমাদের অনাসৃষ্টি কান্ডজ্ঞান দেখে আমার তো স-সে-মি-রা অবস্থা।

তথ্যসূত্র: পুরাতন বইয়ের দোকান/লাইব্রেরি হতে বিভিন্ন লেখকের বাংলা ব্যাকরণ বই সংগ্রহ করে তা এখানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

Exit mobile version