প্র : হাসান আজিজুল হক কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উ : ১৯৩৯ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে।
প্র : তিনি মূলত কী হিসেবে পরিচিত?
উ : কথাসাহিত্যিক।
প্র : তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর নাম কী?
উ : গল্প : শীতের অরণ্য (১৯৬৪), আত্মজা ও একটি করবী গাছ (১৯৬৭), জীবন ঘষে আগুন (১৯৭৩), নামহীন গোত্রহীন (১৯৭৫), পাতালে হাসপাতালে (১৯৮১), আমরা অপেক্ষা করছি (১৯৮৯), রোদে যাবো (১৯৯৫), শিউলি (২০০৬), আগুনপাখি (২০০৬)। প্রবন্ধ : কথাসাহিত্যের কথকতা (১৯৮১), অপ্রকাশের ভার (১৯৮৮), কথা লেখা কথা (২০০২)। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক : একাত্তর-করতলে ছিন্নমাথা, সম্পাদনা : অসীমান্তিক (১৯৯৮)।
প্র : ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ গল্পগ্রন্থ সম্পর্কে লেখ।
উ : দেশ বিভাগের ফরে সৃষ্ট ব্যক্তিচরিত্রের নৈতিক স্খলন সাম্প্রদায়িকতা এবং সংশ্লিষ্ট কারণে সৃষ্ট চরম হতাশা ও দারিদ্র, উত্তেজক পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে রচিত হয় আত্মজা ও একটি করবী গাছ, পরবাসী, সারাদুপুর, অন্তর্গত নিষাদ, মারী, উটপাখি, সুখের সন্ধানে, আমৃত্যু আজীবন এই আটটি গল্প। হাসান আজিজুল হকের এই আটটি গল্পের সমাহারে সমৃদ্দ ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ গ্রন্থটি। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছে ১৯৬৭ সালে। বাংলাদেশের বাংরা ছোটগল্পের ধারায় এই গল্পগ্রন্থটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্র : ‘আমরা অপেক্ষা করছি’ গল্পগ্রন্থের পরিচয দাও।
উ : হাসান আজিজুল হক রচিত ‘আমরা অপেক্ষা করছি’ গ্রন্থটি মিনি মাগরার, চুমকুড়ি হাওয়া নেই, মাটির তলার মাটি, সমুখে শান্তি পারাবার, পাব্লিক সার্ভেন্ট, অচিন পাখি- এই কয়েকটি গল্প নিয়ে প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে। নিু মধ্যবিত্ত জীবনের চিত্র, দারিদ্র্যের কষাঘাতে বিবর্ণ নর-নারীর প্রেমহীনতা, অসুস্থ রাজনীতির ছোবলে সন্তানহারা পিতার শোক ইত্যাদি বিষয় গল্পগুলোতে ফুটে উঠেছে।
প্র : ‘আগুনপাখি’ উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ : ‘আগুনপাখি’ হাসান আজিজুল হকের পৈতৃক নিবাস বর্ধমানের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ওই এলাকার মানুষের সংগ্রামী জীবন এবং বিভেদকামী রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িকতার যথাযথ রূপায়ণ। এর মধ্য দিয়েই লেখক জীবনের নেতিবাচকতা পরিহার করে ইতিবাচকতার সন্ধান করেছেন। উপন্যাসটিতে প্রথাগত চরিত্র-নাম নেই। তবে সব চরিত্রই বোঝা যায়। এগুলো ত্রিমাত্রিক এবং দ্বন্দ্বসংকুল। মেঝ বউ চরিত্রটি উপন্যাসের মূল এবং সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সুসংবদ্ধতার প্রতীকে পরিণত।
প্র : হাসান আজিজুল হক সম্পাদিত ‘অসীমাস্তিক’ গ্রন্থের পরিচয় দাও।
উ : বাংলাদেশ, পঞ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপূর্ব ভারতের মোট একষট্টি গল্পের সমাহারে, হাসান আজিজুল হকের সম্পাদনায় ‘অসীমান্তিক’ বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালে। এই গ্রন্থে প্রকাশিত গল্প থেকে উঠে আসে তিনটি অঞ্চলের জীবনের পরিপূর্ণ দিক, যা পাঠকের কাক্সিক্ষত স্বপ্নের উৎস। এই অর্থে বইটি অত্যন্ত মূল্যবান। এই গ্রন্থে ওই তিন অঞ্চরের গল্পের সমকালীন ধারাও স্পষ্ট হয়।
প্র : তিনি কী কী পুরস্কার লাভ করেন?
উ : আদমজি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৭), বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭০), আলাওল পুরস্কার (১৯৮৩), অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার (১৯৮৪), আনন্দ পুরস্কার (২০০৭)।